লাবন্যর পরিবার সব জায়গায় খুজতে লাগলো কিন্তু কোথা ও খোঁজ মিললো না লাবন্যর। ফাইয়াজ হতাশ হয়ে রাস্তার এক কোণে বসে পড়লো।
রাত ২ টা ৩০
লাবন্য কে বড় একটা বারের তিন তলার একটা রুমে আটকে রেখেছে৷ একজন যেয়ে লাবন্যর চোখ খুলে দিলো৷ অন্ধকার রুমে লাইট জ্বলে উঠলো। লাবন্য সামনের লোকগুলোকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। দুপুরের সেই ছেলেগুলো। সবগুলোর মুখে শয়তানি হাসি ফুটে উঠছে৷ একজন লাবন্যর দিকে শর্ট জামা কাপড় ছুঁড়ে মেরে বললো, ব্যস্ত এগুলো পড়ে নে। যদি জোর করতে হয় তাহলে তোর শরীরের একটা অংশ ভালো থাকবে না৷ তুই আজকে আমাদের সবার রাতের পরী৷
লাবন্য ভয়তে হাত জোর করে কান্না করে
- আমার এত বড় সর্বনাশ করবেন না৷ আমাকে ছেড়ে দেন। ( লাবন্য)
পাশ থেকে আরেকজন বললো, তোকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য এখানে তুলে আনি নি৷ আমাদের টার্গেটে যারা পড়ে তারা আর বাচতে পারে না। তোর যা ফি*গার মাথা নষ্ট করা।
আরেকজন বললো, দেরি করছিস কেন ব্যস্ত পড়ে নে৷ নেশার ঘরে তোকে আনন্দ দিবো।
সবাই একত্রে হেসে উঠলো। লাবন্য ভয়তে কাঁপতে লাগলো৷ কান্না করতে লাগলো। রুমের কালার নাইট গুলো জ্বলে উঠলো। একজন লাবন্য চুলের মুঠি ধরে শর্ট জামা কাপড় দিয়ে, বেবি কেঁদে কোনো লাভ হবে না। স্বইচ্ছায় ইনজয় করো না হলে এমন অত্যাচার করবো তখন বুঝবা। - আমাকে বাসায় যেতে দেন আপনারা। আমার এতো বড় সর্বনাশ করবেন না প্লিজ। ( লাবন্য)
সবাই ভীতি চেহারা দেখে হেসে উঠলো সবাই। আরেকজন বললো, ভালো কথায় কাজ হবে না দেখি।
ছেলেটা কথাটা বলে লাবন্যর ডান বাহুর জামা ছিঁড়ে ফেললো। আরেকজন বাম বাহুর জামা। লাবন্য কান্না করতে লাগলো। আরেকজন লোভার্ত ভাবে এগিয়ে যেয়ে লাবন্যের বুকের জামা ধরতে যাবে তখনি সে ফ্লোরে বুথ হয়ে পড়লো। সবাই অবাক হয়ে গেলো৷ লাবন্য চোখ বন্ধ করে কান্না করতে করতে না না বলতে লাগলো। রুমের ভেতর একজন বড় ছুড়ি নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। ছেলেগুলো একত্রে হয়ে, কে তুই? মরার জন্য এখানে এসেছিস কেন?
- ডার্ক ডেবিল। ডার্ক ডেবিল মরতে আসে না মারতে আসে। ( ডার্ক ডেবিল)
![]() |
এক ভিলিয়ান পর্ব ১২ |
ডার্ক ডেবিল নামটা শুনে লাবন্য চোখ খুললো। একজন ডার্ক ডেবিলের দিকে তেড়ে গেলো। ডার্ক ডেবিল কোমড় থেকে ছোট ছুড়ি বের করে প্রথমে ছেলেটার বুকে তারপর হাতে। সেকেন্ডের ভেতর ছেলেটার শরীর ঝাঝড়া হয়ে গেলো। লাবন্য এমন দৃশ্য দেখে চিৎকার দিয়ে উঠলো। ছেলেগুলো ভীত হয়ে গেলো। ডার্ক ডেবিল জোরে হেসে উঠে,
-অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছিস । মেয়েদের এমন ভাবে মেরেছিস তাদের পরিবার লাশগুলো পায় নি। তোদের এমন ভাবে মারবো তোদের লাশ দেখে অপরাধী রা ভয়তে কেঁপে উঠবে৷ আর কোনো মেয়ের সর্বনাশ করতে পারবে না। ( ডার্ক ডেবিল)
একটা ছেলে পিস্তল বের করে বললো, তুই হিরো হতে এসেছিস একা। একজনকে মেরে ফেলে হিরো হয়ে গেছিস। তোরে এমন ভাবে মারবো তোর লাশের চিহ্ন কেউ খুঁজে পাবে না।
ডার্ক ডেবিল হাসলো। ছেলেটা পিস্তলের টিগ্যারে চাপ দিতে তখনি হাত থেকে পিস্তল পড়ে যায়। গুলির শব্দে লাবন্য কানে হাত দিয়ে চিৎকার করে উঠলো। ছেলেটা ফ্লোরে বসে পড়লো। বাকীরা ডার্ক ডেবিলের এগিয়ে গেলো। ডার্ক ডেবিল সবার মাঝখানে পড়ে ছুড়ি চালাতে লাগলো ছেলেগুলোর গায়ে৷ লাবন্য এমন দৃশ্য দেখে চিৎকার করতে লাগলো। লাবন্যর চিৎকারে পুরো রুম ভারি হয়ে গেলো। ফ্লোরে রক্ত ভেসে যাচ্ছে। ছেলেগুলো এক এক করে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লো। ডার্ক ডেবিলের সারা শরীরে রক্ত লেগে আছে৷ লাবন্য ভয়তে মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না। ডার্ক ডেবিল চেয়ারে বসে সিগারেট জ্বালালো। একজনকে ইশারা করতে সে এসে লাবন্যকে ধরে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। লাবন্য বলতে লাগলো বার বার
- আমাকে ছেড়ে দেন আপনারা। আমার ক্ষতি করবেন না৷ আমাকে বাসায় যেতে দেন। ( লাবন্য)
আরেকজন সামনে থেকে এসে লাবন্যর শরীরে উড়না পেছিয়ে দিলো। লাবন্য এমন দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে গেলো। সবাই মুখোশ পড়া। কারা এনারা চেনার উপায় নেই। বারের ভেতর সবাই নেশা করে যে যার তালে রয়েছে।
রাত ৩ টা ৩০
লাবন্য বাসার সামনে কালো রংঙের একটা গাড়ি থামলো। গেইটের সামনে লাবন্যর মা বাবা দাঁড়িয়ে ছিলো৷ একজন গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির দরজা খুলে দিলো। লাবন্যর মা বা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। লাবন্য গাড়ি থেকে নামতে লোকটা গাড়িতে উঠা মাত্র গাড়ি চলে গেলো। লাবন্যর মা লাবন্যকে দেখে দৌড়ে এসে লাবন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো৷ লাবন্য ও কান্না করে দিলো। ফাইয়াজ খবর পেয়ে ছুটে চলে আসলো। লাবন্যকে নিয়ে ঘরে চলে গেলো। লাবন্য সোফায় বসে আছে লাবন্যর মা লাবন্যর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ফাইয়াজ লাবন্যর সামনে বসে লাবন্যর হাত ধরে
- তুমি ঠিক আছো তো। তোমার কিছু হয় নি তো৷ কারা নিয়ে গেছিলো তোমাকে৷ ( ফাইয়াজ)
- আমার কিছু হওয়ার আগেই কই থেকে একজন চলে আসলো। তারপর সবাইকে একসাথে। ( লাবন্য)
লাবন্য কথাটা বলে কেঁদে ফেললো। ফাইয়াজ লাবন্যকে আর কিছু বললো না। লাবন্যকে রেস্ট করতে বললো। লাবন্য চুপ হয়ে গেলো।
**
হঠাৎ করে বারের ভেতর পুলিশ ঢুকতে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেলো। কেউ কেউ বার থেকে পালানোর চেষ্টা করছে৷ সবাই ভাবছে রেট পড়েছে। পুলিশের সোর্সরা বার টা ঘিরে ফেলছে। কেউ পালাতে পারবে না৷ কয়েক জন সোর্স উপরে চলে গেলো। রুম খুলে ভেতরে দেখতে হা হয়ে গেলো সবাই। একজন ফোন বের করে মুরাদ কে কনফারেন্সের করলো। মার্ডার হয়েছে৷ মুরাদ রওনা দিলো। বারের সবাই মার্ডার হওয়ার কথা শুনে আতংকে উঠলো। সবাই কানাঘুষা করতে লাগলো। সবার ভেতরে ভয় ঢুকে গেলো৷
কিছুক্ষণ পর মুরাদ আসলো। সাথে মিডিয়ার লোক জন ও চলে এসেছে৷
মুরাদ ভেতরে ঢুকে সোর্সদের বললো, কেউ জেনো ভেতরে আসতে না পারে৷ আর কেউ জেনো বাহিরে যেতে না পারে৷
মুরাদ কথা বলে উপরে চলে গেলো। রুমের দরজা খুলে লা*শ দেখতেই মুরাদ বললো, জা*নোয়ারের মতো করে এভাবে কেউ কাউকে মারে৷ মুখ গুলো বিবস্ত্র করে ফেলছে। মুখ চেনার উপায় নেই।
মুরাদ নিচে চলে আসলো। সবাইকে জিঙ্গেস করলো। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারলো না। মুরাদ ম্যানেজারকে নিয়ে কন্ট্রোল রুমে চলে গেলো। সিসি টিভি ফুটেজ দেখলো কিন্তু আজকের কোনো ফুটেজ নেই৷ মুরাদ অবাক হয়ে গেলো৷ মুরাদ রাগি ভাবে ম্যানেজারের দিকে তাকিয়ে পড়ে
- তোর বসকে ফোন দিয়ে বল আমার সাথে কথা বলতে না হলে তোরা একটা ও রেহাই পাবি না। ( মুরাদ)
ম্যানেজার চলে গেলো। অন্য প্রশাসনের লোকজন এসে লা*শগুলো দেখে অবাক। লা*শ গুলো চিহ্নিত করতে পারছে না। ছবি তুলছে। একে অপরের সাথে কথা বলছে। সব জায়গা দেখলো কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই৷
মুরাদ সবার সাথে কথা বলে এক এক করে বারের লোকদের চেক করছে আর বাহির করছে৷ বাহিরে মিডিয়ার লোকজন অপেক্ষা করছে। মিডিয়ার লোকজন যে যার মতো নিউজ করছে৷ লাবন্যরা টিভি চালিয়ে নিউজ দেখতে লাগলো।
সবাই বের হয়ে যাওয়ার পর স্ট্রেচারে করে লা*শগুলো বের করছে। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। বাতাসে মুখের উপর থেকে কাপড় সরতে চেহারা দেখে সবাই আতংকে উঠলো।
কিছুক্ষণ পর মুরাদ বের হলো। মিডিয়ার লোক মুরাদকে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করতে লাগলো। মুরাদ বললো
- কে মার্ডার করেছে আমরা জানি না৷ কোনো প্রমাণ রেখে যায়নি। আমরা তদন্ত করছি যেই অপরাধী হোক না কেন? তাকে আইনের আওতায় নিয়ে শাস্তি দিবো৷ এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারছি৷ ময়না তদন্তের পর শনাক্ত করা হবে কারা ছিলো৷ ( মুরাদ)
মুরাদ কথাটা বলে চলে গেলো গাড়িতে উঠে৷।
মিডিয়ার লোকরা নিউজ করতে লাগলো।
সকাল ৯ টা
কাব্য রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো। এখানো আসেনি। রেস্টুরেন্টের সামনে কাব্য পায়চারি করতে লাগলো। ৩০ মিনিট পর ফাইজা আসলো। চাবি দিয়ে রেস্টুরেন্ট খুললো। কাব্য আড় চোখে ফাইজাকে দেখছে৷ ফাইজা ভেতরে ঢুকে
- আজকে আর লাবন্য আসবে না। মন দিয়ে কাজ করবি৷ যদি ভূল করিস তাহলে তোকে আমার হাত থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। ( ফাইজা)
- ম্যাডাম আসবে না কেন? কি হয়েছে ম্যাডামের। ( কাব্য)
- তোকে এতোকিছু জানতে হবে না৷ তুই তোর কাজ কর। ( ফাইজা)
কাব্য মাথা নাড়ানো। ফাইজা চিকেনে চলে গেলো।
**
সকাল ১০ টা
ডাক্তার আশিক মুরাদকে কল দিলো। মুরাদ কল ধরেই বললো
- ডাক্তার লা*শ গুলো শনাক্ত হয়েছে। ( মুরাদ)
- হ্যা তবে। ( আশিক)
- তবে কি? ( মুরাদ)
- সবাই প্রভাবশালীর ছেলে। একটা ছেলে ঐ বারের মালিকের ছেলে। ( আশিক)
মুরাদ হা হয়ে গেলো। আশিক এক এক করে ছেলেগুলোর বাবার নাম বললো। মুরাদ নাম শুনে হা হয়ে গেলো। মুরাদ বললো
- কে এভাবে মারতে পারে? আচ্ছা কোনো ক্র পাওনি। ( মুরাদ)
- হ্যা। ডার্ক ডেবিল মেরেছে ওদের৷ ( মুরাদ)
ডার্ক ডেবিল নামটা শুনতে মুরাদ অবাক হয়ে গেলো। কলটা কেটে দিয়ে বড় অফিসারকে ফোন দিয়ে বললো সবটা৷ বলা শেষে বললো
- আপনি ওনাদের সামলান৷ না হলে শহরের অবস্থা খারাপ হবে। ডার্ক ডেবিলকে যে করেই হোক খুজে বের করতে হবে৷ না হলে সমস্যার ভেতর পড়তে হবে৷ ( মুরাদ)
বড় অফিসার এদিক টা সামলাবে বলে কলটা কেটে দিলো। মুরাদ চিন্তায় পড়ে গেলো কে এই ডার্ক ডেবিল। এই শহরে এই নামে কে হতে পারে। ওকে যে করেই হোক খুঁজে বের করতে হবে৷ না হলে আমাদের বদনাম হবে।
**
হাসপাতাল থেকে লাশগুলো পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিলো। যারা মারা গেছে তারা এই শহরের গন্য মান্য ব্যক্তির ছেলেরা। ছেলেদের মৃত্যু টা জেনো তারা কেউ মেনে নিতে পারলো না। মুরাদ কে হুমকি দিলো খু*নি কে ধরার জন্য৷ না হলে শহরে আগুন জ্বালিয়ে দিবে৷ কাউকেই ছাড়বে না৷
মিডিয়ার লোকজন পরিবারের সবার বক্তব্য নিলো। তাদের ছেলেরা ভালো অনেক। ওদের শত্রু হতে পারে না৷ কেন বারের রুমে নিয়ে হ*ত্যা করা হলো জানে না৷ খুনির বিচার তারা চায়। আর জানো কোনো মায়ের কোল খালি না হোক।
মুরাদ সংবাদ সম্মেলন করলো। সেখানে বললো
- ডার্ক ডেবিল নামে এক সন্ত্রাসী টার্গেট করে সবাইকে বারে নিয়ে গেছিলো। তার কার্য হাসিল করার জন্য এভাবে হ*ত্যা করেছে সবাইকে৷ ছেলে গুলোর নামে কোনো বাজে রিপোর্ট নেই৷ ওরা সবাই ভালো ছিলো। ( মুরাদ)
মিডিয়ার লোক জিঙ্গেস করলো, কে এই ডার্ক ডেবিল৷ তার সাথে ছেলেগুলোর শত্রুতা কি ছিলো?
মুরাদ অনেক মিথ্যা বানিয়ে বলতে লাগলো। লাবন্য নিউজ দেখে বলতে লাগলো, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা৷ ডার্ক ডেবিল সন্ত্রাসী না। ওরা ছিলো খারাপ৷ ওরা খারাপ।
লাবন্য কথাগুলো বলতে বলতে চোখ বড় বড় করে ফেললো টিভির দিকে। লাইভ নিউজে ছেলে গুলোর অপকর্মের ভিডিও চলতে লাগলো।
নিউজ চ্যানেলের সবাই হা হয়ে গেলো। এমন নিউজের জন্য উপর থেকে কল আসতে লাগলো নিউ বন্ধ করার জন্য। অনেক চেষ্টা করে ও বন্ধ করতে পাচ্ছে না৷ সব হাতের বাহিরে চল গেছে। হ্যাক হয়েছে চ্যানেল ।
মুরাদ নিজের মতো করে বলে গেলো। মিডিয়ার লোকদের ফোনে টং করে ম্যাসেজ বেজে উঠলো। সবাই ম্যাসেজটা দেখে অবাক হয়ে গেলো। মিডিয়ার লোক একজন ভিডিও টা দেখাতে মুরাদের কাছে ফোন দিলো। মুরাদ ভিডিও টা দেখে ঘামতে শুরু করলো। মিডিয়ার লোক বললো, আপনি বললেন ওরা সবাই ভালো। ওরা এভাবে কত মেয়ের জীবন নিয়ে নিয়েছে৷ তার কোনো কেস ফাইল হয় নি। সবাই প্রভাবশালী ছিলো বলে তাদের ছেলেরা ইচ্ছা মতো অপকর্মে লিপ্ত ছিলো৷
মিডিয়ার প্রশ্নের তোপের মুখে পড়ে মুরাদ আমতা আমতা করে
- আ আ আ আমাদের কাছে কোনো কমপ্লেন আসেনি। আসলে নিশ্চয়ই আমরা এর পদক্ষেপ নিতাম৷ ( মুরাদ)
মুরাদ বেশি কিছু না বলে চলে গেলো। মিডিয়ার লোকজন বুঝতে পারলো না তাদের প্রশ্নের সব উত্তর না দিয়ে চলে গেলো কেন?
**
এদিকে কাব্য কাউন্টারে বসে কম্পিউটার চালাচ্ছিলো । তখনি ফাইজা পিছন থেকে বললো
- এই ফকিন্নির বাচ্চা কাউন্টারে বসছিস তোর তো সাহস কম না। ওদিকে কাস্টমার বসে আছে অর্ডার কি তোর বা*প এসে নিবে। ( ফাইজা)
ফাইজার মুখে বাপ কথা শুনে কাব্য ফাইজার মুখের দিকে তাকিয়ে পড়লো। ফাইজা বললো
- ফকিন্নির বাচ্চা আমার মুখের দিকে কি দেখছিস। যা অর্ডার নে৷ ম্যাডাম আসুক তোর ব্যবস্থা করছি। ( ফাইজা)
কাব্য কোনো কিছু না বলে ক্যাশ কাউন্টার থেকে উঠে ফাইজার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দিলো। ফাইজা হাসিটা জেনো সহ্য করতে পারলো না। বলতে লাগলো,
- গায়ে কোনো লজ্জা নেই। এতো বলি তাও লজ্জা নেই। আবার হাসে। ছোটলোক কোথাকার। ( ফাইজা)
**
এদিকে ডার্ক ডেবিল কে প্রথমে সবাই গালি দিলে ও পরের লাইভ দেখে জন সাধারণের মুখে প্রশংসায় ভেসে যাচ্ছে। সব জায়গায় ডার্ক ডেবিল নামটা ফুটে উঠলো।
**
দুপুর ১ টা
তামান্না রেস্টুরেন্টে এসে দেখলো লাবন্য আজ আসে নি। তামান্না ফাইজাকে জিঙ্গেস করলো
- লাবন্য আসে নি কেন? ( তামান্না)
- গতকাল রাতে বাসায় যাওয়ার সময় লাবন্যকে কয়েকজন তুলে নিয়ে গেছিলো। গভীর রাতে ওকে আবার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে গেছে। ( ফাইজা)
তামান্না কথাটা শুনে অবাক হয়ে
- কিহ্ এতো বড়ো ঘটনা ঘটে গেলো আমি জানি না৷ ( তামান্না)
- ম্যাডাম আমি ও জানতাম না৷ সকালে জেনেছি। ( ফাইজা)
- এদিকে কোনো অসুবিধা নেই তো। ( তামান্না)
- না ম্যাডাম। তবে ঐ ফকিন্নিটা বেশি জ্বালাচ্ছে। ওকে আমার সন্দেহ হচ্ছে। ( ফাইজা)
- কিসের সন্দেহ। ( তামান্না)
- ও ঘুরে ফিরে ক্যাশ কাউন্টারে এসে বসে বার বার। ও মনে হয় টাকা চুরি করার মতলব আসে। ( ফাইজা)
- ডাকো ওকে। ( তামান্না)
ফাইজা কাব্যকে ডেকে আনলো৷ কাব্য আসতে তামান্না বললো
- কি রে তুই টাকা চুরি করার জন্য বার বার ক্যাশে বসছিস। ( তামান্না)
কাব্য মাথা নাড়াতে নাড়াতে না বললো। তামান্না বললো
- শোন তোর যদি চাকরি করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আর জানো তোকে ক্যাশের ধারে জানো না দেখি। আর একবার যদি শুনি তুই বসছিস তাহলে তোকে চাকরি থেকে বের করে দিবো। ( তামান্না)
কাব্য ফাইজার মুখের দিকে তাকালো। ফাইজার মুখে শয়তানি হাসি স্পষ্ট ফুটে উঠছে। কাব্যের বুঝতে বাকী নেই ফাইজার কাজ এটা। তামান্না বললো
- তুই আমার সাথে চল। তোর কাজ আছে৷ ( তামান্না)
- ম্যাডাম খাবার নিয়ে কোম্পানি যেতে হবে। ( কাব্য)
- ঠিক আছে খাবার দিয়ে আমার সাথে দেখা করবি। ( তামান্না)
কাব্য মাথা নাড়লো। তামান্না চলে গেলো। ফাইজা বললো
- তোর কি লজ্জা বলতে কিছু নেই। এতো অপমান হওয়ার পর ও কেন চলে যাস না৷ ( ফাইজা)
- গরীবদের লজ্জা অপমান থাকলে পেটে আর ভাত জুটবে না। সবাই তো গরীবদের উঠতে বসতে অপমান করে। ( কাব্য)
- ভালো কথা শিখে গেছিস। যা কাজ কর। ( ফাইজা)
কাব্য আর কিছু না বলে চলে গেলো।
**
দুপুরে খাবার নিয়ে কাব্য কোম্পানিতে গেলো। খাবার ক্যান্টিনে দিয়ে চলে আসতে যাবে তখন একজন বললো, তোমাকে আফরিন ম্যাডাম দেখা করে যেতে বলছে। লোকটার কথা শুনে কাব্য অবাক হয়ে গেলো হঠাৎ করে আফরিন ম্যাডাম আমাকে দেখা করতে বললো কেন? কাব্য চলে গেলো আফরিনের ডেক্সে। আফরিন কাব্য কে দেখে
- এসেছো৷ বসো। ( আফরিন)
- না আমার কাজ আছে। ( কাব্য)
- কফি না খেয়ে কোথাও যেতে পারবা না। ( আফিরন)
- আজ না অন্য একদিন। ( কাব্য)
- বসতে বলছি তোমাকে বসো। ( আফরিন)
কাব্য আর কিছু না বলে বসলো৷ কফি আনলো। কাব্যকে দিলো। কফি খেতে খেতে কাব্যের সাথে কথা বলতে লাগলো। কাব্যের খোঁজ খবর নিতে লাগলো। কোথায় বাসা এখানে থাকে কই। সব কিছুই।
২ দিন পর
কাব্য অর্ডার নেওয়ার জন্য টেবিলের কাছে যেয়ে বসে থাকা ছেলেগুলোকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। কাব্য চলে আসবে ঠিক তখনি ঠাস ঠাস করে চড়ের শব্দ হলো। রেস্টুরেন্টের সবাই তাকিয়ে পড়লো অবাক হয়ে.........
চলবে....
Ek villian
Part 12
Writer
MeherabKabbo