কাব্য প্লেট হাতে করে যখন নিয়ে যেতে যাবে তখন লাবন্য কাব্য কে ডাক দিলো। কাব্য সামনের দিকে যেতে হঠাৎ করে একটা মেয়ের সাথে ডাক্কা লাগে। মেয়েটা ঠাস ঠাস করে কাব্যের গালে চড় বসিয়ে দেয়। থাপ্পড়ের শব্দে লাবন্য অবাক হয়ে চেয়ে পড়লো। মেয়েটা আর কেউ না আজমল চৌধুরী র একমাত্র মেয়ে তামান্না৷ তামান্না চড় মেরে বললো
- ফকিন্নির বাচ্চা দিলি তো আমার ড্রেস টা নষ্ট করে। চোখ কপালে রেখে হাঁটিস। ফকিন্নির বাচ্চা মেয়ে মানুষ দেখলে গায়ে পড়তে মন চাই। ( তামান্না)কাব্য গালে হাত দিয়ে তামান্নার দিকে তাকালো। প্লেট নিচে পড়ে ভেঙ্গে গেছে৷ লাবন্য ক্যাশ কাউন্টার থেকে বের হয়ে কাব্যের সামনে দাঁড়ালো। তামান্না নিজের ড্রেস এর দিকে রেগে গেলো। লাবন্য বললো
- ম্যাম শান্ত হোন। ছোট্ট একটা ভূল হয়ে গেছে। ( লাবন্য)
তামান্না রাগে লাবন্যকে ডাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে কাব্যের কলার ধরে
- তুই চিনিস আমাকে। আমার এই ড্রেস এর মূল্য জানিস। তোর মতো ওয়েটার এর ৪ মাসের বেতনের সমান। তোকে কাজে কে নিয়েছে। ( তামান্না)
কাব্য অবাক হয়ে তামান্নার রাগি চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। লাবন্য পিছন থেকে তামান্নার কানের কাছে বললো
- ম্যাম কাস্টমার রা দেখলে রেস্টুরেন্টের বদনাম হবে। ( লাবন্য)
লাবন্যর কথা শুনে তামান্না কাব্যের কলার ছেড়ে দিয়ে
- এই লাবন্য ওর দু মাসের বেতন দিবি না। ওকে দিয়ে সব কাজ করাবি। যদি বেতন দিস তোর চাকরি থাকবে না। ( তামান্না)
কাব্য ঘাবড়ে গেলো বেতন দিবে না শুনে। কাব্য হাত জোর করে বললো
- ম্যাডাম এমন কাজ করবেন না। আমার মা আছে গ্রামে। বেতন না পেলে মা খেতে পাবে না। এমন অবিচার করবেন না। আপনি যা শাস্তি দেওয়ার দেন। তবুও আমার বেতন কাটবেন না। ( কাব্য)
কাব্যের কথা শুনে তামান্না আরো রেগে যেয়ে কাব্যের গালে চড় মেরে
- লাবন্য এটাকে আমার চোখের সামনে যেতে বল। না হলে কিন্তু। ( তামান্না)
তামান্নার কথা শুনে লাবন্য বললো
- কাব্য তুমি ভেতরে যাও। ( লাবন্য)
কাব্য লাবন্যর কথা মতো চোখের পানি মুছতে মুছতে কিচেনে চলে গেলো। লাবন্য বললো
- ম্যাডাম টিস্যু দিয়ে মুছে দি। ( লাবন্য)
- কোনো দরকার নেই। আমার দিন টাই নষ্ট করে দিলো ফকিন্নির বাচ্চা টা। ও জেনো আমার সামনে আর না পড়ে। ( তামান্না)
তামান্না কথাটা বলে রেস্টুরেন্ট থেকে চলে গেলো। লাবন্য কিচেনে যেয়ে একজনকে পাঠালো প্লেট গুলো উঠিয়ে পরিষ্কার করতে। লাবন্য কাব্যের সামনে বসে
- সরি। ( লাবন্য)
কাব্য লাবন্যের কথা শুনে অবাক হয়ে
- আপনি কেন সরি বলছেন? ( কাব্য)
- আমার জন্যই তোমাকে চড় খেতে হলো। এতোগুলো কথা শুনতে হলো। আমি দেখেছি তোমার কোনো দোষ নেই। তামান্না ম্যাডাম সে খেয়াল না করে তোমার সাথে ডাক্কা লেগেছে। ( লাবন্য)
কাব্য মাথা নিচু করে নিয়ে
- আমার বেতন টা কাটবেন না প্লিজ। আমার মা কে আমি ছাড়া দেখার মতো কেউ নেই। ( কাব্য)
লাবন্য কাব্যের কাঁধে হাত দিয়ে
- চিন্তা করো না তোমার বেতন পাবে। আমি বড় স্যারের সাথে কথা বলে নিবো। আর শোনো তামান্না ম্যাডাম কিন্তু এই রেস্টুরেন্টের মালিক। সে রেস্টুরেন্টে থাকা কালীন তুমি তার সামনে যাবে না। ( লাবন্য)
কাব্য মাথা নাড়ালো। লাবন্য চলে যেতে যাবে তখন কাব্য লাবন্যকে বললো
- আপনি অনেক ভালো। আপনি না থাকলে হয়তো আমি এখানে থাকতে পারতাম না। সবার মুখে শুনেছি খারাপের ভেতর একজন হলে ও ভালো মানুষ পাওয়া যায়৷ আর সেটা আপনি। ( কাব্য)
লাবন্য মুচকি হেসে চলে গেলো। কাব্য প্লোট ধুতে লাগলো। ফাইজা এসে কাব্যকে বললো
- তুই কি ভূল করেছিস জানিস না। ম্যাডামের দামী জামা নষ্ট করে দিছিস। তোরে ১ বছর বেতন দিবে না। তোর উপর দিয়ে কি ঝড় যাবে তুই নিজে ও জানিস না। সাবধানে থাকিস। ( ফাইজা)
![]() |
ek villain part 4 |
কাব্য মাথা উচু করে ফাইজার দিকে তাকালো। ফাইজা শয়তানি হাসি দিয়ে চলে গেলো। কাব্য মনে মনে বললো, এই ডায়নির হাত থেকে কবে রক্ষা পাবো কে জানে। সারাক্ষণ শুধু অপমান করতে থাকে।
**
আজমল চৌধুরী সোফায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছিলো আর নিউজ পেপার পড়তে ছিলো তখনি তামান্না বাসার ভেতর ঢুকলো। তামান্না কে দেখে আজমল চৌধুরী বললো
- কি রে মা এতো তাড়াতাড়ি চলে আসলি। কোনো সমস্যা হয়েছে কি? ( আজমল চৌধুরী)
- সমস্যা না হয়ে থাকে। যে স্টাফ গুলো রেখেছো সবগুলোই অপকর্মা। কত দিন পর গেলাম রেস্টুরেন্টে। মেজাজ টাই দিলো বিগড়ে। আমার জামা নষ্ট করে দিছে। ওকে আমি ছাড়বো না। ( তামান্না)
তামান্না রাগে গজ গজ করতে করতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো। আজমল চৌধুরী পেপারস্ টা ভাজ করে রেখে ফোনটা হাতে নিয়ে লাবন্য কে কল করলো। লাবন্য কলটা রিসিভ করতেই আজমল চৌধুরী বললো
- রেস্টুরেন্টে মামনির সাথে কার ঝামেলা হয়েছে। ( আজমল চৌধুরী)
- স্যার আমাদের নতুন স্টাফ ছেলেটার সাথে। ( লাবন্য)
আজমল চৌধুরী গম্ভীর গলায় বললো
- কি করেছে ও? ( আজমল চৌধুরী)
- স্যার আমি কাব্যকে ডাক দিছিলাম একটা পার্সেল আনার জন্য। ও আমার দিকে আসতে ম্যাডাম হুট করে রেস্টুরেন্টে ঢুকে পিছনের দিকে তাকাতে যেয়ে কাব্যের সাথে ডাক্কা লাগে। প্লেট থাকা খাবার ম্যাডামের গায়ে পড়ে। ( লাবন্য)
লাবন্য আজমল চৌধুরী কে সবটা বললো। আজমল চৌধুরী বললো
- আমি বুঝতে পেরেছি বিষয়টা। ওকে আমি অন্য রেস্টুরেন্টে শিফট্ করে দি। ( আজমল চৌধুরী)
- না স্যার। ও অনেক সহজ সরল। অন্য রেস্টুরেন্টে থাকতে পারবে না। এখানেই থাকুক। ( লাবন্য)
- তুমি তো আমার মেয়েকে চিনো। ও তো রেগে আছে খুব। ( আজমল চৌধুরী)
- হ্যা। ম্যাডাম তো শাস্তি দিয়েছে। ওর বেতন দিতে না করেছে। ( লাবন্য)
- আচ্ছা তুমি ছেলেটার বেতন দিয়ে দিয়ো তবে মামনি জানো কিছু না জানে ঠিক আছে। ( আজমল চৌধুরী)
- ধন্যবাদ স্যার। ( লাবন্য)
আজমল চৌধুরী ফোনটা কেটে দিলো। লাবন্য ফোনটা রেখে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। মনে মনে বললো বড় স্যার অনেক ভালো একজন মানুষ ।
রাত ১০ টা ৩০
রেস্টুরেন্ট থেকে সবাই চলে গেলো। লাবন্য আর কাব্য অবশিষ্ট খাবার নিয়ে বের হলো রাস্তায় পথচারীদের দেওয়ার জন্য। খাবার দেওয়া শেষে লাবন্য বললো
- তোমার আর কোনো সমস্যা নেই। বড় স্যারের সাথে কথা হয়েছে উনি তোমার বেতন দিবে। তবে সাবধান কেউ জানো না জানে। ( লাবন্য)
- ঠিক আছে। ( কাব্য)
লাবন্যদের সামনে একটা বাইক থামলো। বাইকে থাকা ছেলেটা হেলমেট খুলার সাথে সাথে লাবন্য কাব্যকে বললো
- ও ফাইয়াজ । আমার হবু হাসবেন্ড । আমাকে রোজ নিয়ে যায় নিয়ে আসে। ( লাবন্য)
লাবন্য ফাইয়াজের সাথে কাব্যকে পরিচয় করিয়ে দেয়। ফাইয়াজ বললো
- লাবন্যর মুখে তোমার অনেক কথা শুনেছি। তোমাদের রেস্টুরেন্টে কিন্তু ফাইজা ডায়নির থেকে দূরে থাকবা। ( ফাইয়াজ)
লাবন্য ফাইয়াজের দিকে চোখ পাকিয়ে
- আমার বান্ধবী ডায়নি হ্যা। ( লাবন্য)
কাব্য হেসে দিলো। ফাইয়াজ বললো
- না না মানে আমার সাথে কি করতো দেখো নি। পুরো কাল নাগিনি ( ফাইয়াজ)
ফাইয়াজ কথাটা বলে হেসে দিলো। লাবন্য ফাইয়াজের বাইকে উঠে ফাইয়াজের পিঠে কিল ঘুসি মারতে লাগলো। ফাইয়াজ হাসতে হাসতে বাইক স্টার্ট দিয়ে কাব্যের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো। কাব্য ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখের আড়াল হতেই কাব্য চলে গেলো নিজ স্থানে। কাব্য মিরানের পাশে বসলো। মিরান কাব্যকে বললো
- তুই রোজ রোজ এতো খাবার আমাদের সবাইকে কেন দিস? ( মিরান)
- আমি রেস্টুরেন্টে কাজ করি। সেই রেস্টুরেন্টে খাবার অতিরিক্ত থাকে। ম্যানেজার ম্যাডাম থেকে খাবার দেয়। খাবার গুলো তো ফেলে দেওয়া লাগতো তাই না ফেলে সবার মাঝে বন্টন করে। ( কাব্য)
- তোর ম্যানেজার টা অনেক ভালো তাই না। ( মিরান)
- হ্যা। মালিক ও অনেক ভালো। ( কাব্য)
- এতো বছর এখানে এরকম ভাবে কেউ কখনো খাবার দেয় নি। তুই আসার পর থেকে কেউ আর রাতে না খেয়ে থাকে না। ( মিরান)
কাব্য মিরানের সাথে কথা বলছে আর ব্যাগ থেকে বই বের করলো। মিরান অবাক হয়ে
- তোর হাতে বই কেন? ( মিরান)
কাব্য দাঁত কেলিয়ে হেসে দিয়ে
- আমি এখানকার একটা কলেজে ভর্তি হয়েছি। ( কাব্য)
- তোকে তো কলেজে যেতে দেখি না। তাহলে ভর্তি হলি কিভাবে। তোকে পড়তে দিবে ( মিরান)
- কলেজে না যেয়ে ও পড়া যায়। পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দিলেই হবে। ( কাব্য)
- আমি এতো কিছু বুঝি না। ( মিরান)
মিরান শুয়ে পড়লো। কাব্য ল্যাম্পপোস্টের আবছা আলোয় বইয়ের পৃষ্টা দেখতে লাগলো।
বই দেখতে দেখতে রাত ২ টা বেজে গেছে সেদিকে কাব্যের কোনো খেয়াল নেই। হঠাৎ করেই কয়েকটা গাড়ি এসে রাস্তার মাঝখানে দাড়ালো। গাড়ির ভেতর থেকে একজনকে রাস্তায় ফেলে রেখে গাড়িগুলো চলে গেলো। কাব্য এই দৃশ্য দেখে মিরানকে ঠেলতে লাগলো৷ মিরান উঠে বসে
- কি হয়েছে তোর? ( মিরান)
কাব্য আঙ্গুল দিয়ে লাশটা দেখিয়ে দিয়ে
- কয়েকটা গাড়ি এসে ফেলে রেখে চলে গেছে। ( কাব্য)
মিরান কাব্যকে টেনে শুয়ে দিয়ে নিজে শুয়ে পড়ে
- কোনো কথা বলবি না। চোখ বন্ধ করে থাক। যায় হয়ে যাক চোখ খুলবি না। কান দিয়ে শুনার হলে শুনবি না হলে ঘুমা৷ ( মিরান)
মিরানের এমন কথা শুনে কাব্য অবাক হয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর আরো কয়েকটা গাড়ি এসে থামার শব্দ পেলো৷ মিরান বললো
- পুলিশ এসেছে। লাশ নিয়ে চলে যাবে। ( মিরান)
কাব্য এক চোখ খুলে দেখলো কয়েকটা পুলিশ নেমে দাঁড়িয়েছে। একজন লাশের সামনে হাটু ভেঙ্গে পড়ে হাত দিয়ে লাশটা দেখছে। কয়েকজন আশপাশ দিয়ে হাটাচলা করছে। হাটু ভেঙ্গে বসা লোকটা উঠে দাঁড়ালো । দুজন স্ট্রেচার রাস্তার উপর রেখে লাশটা উঠিয়ে নিলো। পুলিশের লোকটা সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। এগিয়ে এসে পাশের কয়েক জনকে ডেকে তুলে কিছু জিঙ্গেস করলো। সবাই ঘুমানো কন্ঠে না বললো। তারপর পুলিশ লোকটা চলে গেলো। এক এক করে পুলিশের গাড়ি চলে গেলো।
ভোর ৬ টা
মিরান কাব্যকে ডেকে তুলে বললো
- তোর আর এখানে রাতে ঘুমাতে হবে না। ( মিরান)
কাব্য চোখ ডলতে ডলতে
- কেন? আমি কি করেছি। আমি থাকবো কই তাহলে। ( কাব্য)
- তোর জন্য আমরা এখানে যারা থাকি তারা আর কেউ থাকতে পারবো না। তোকে বারণ করার পর ও তুই রাত জেগে এসব দেখিস। কারো চোখে পড়লে কি অবস্থা হবে বুঝতে পারছিস। ( মিরান)
- আমি কি আর ইচ্ছা করে দেখি নাকি। সব তো এখানেই হয়। এসব কবে বন্ধ হবে। ( কাব্য)
- এরকম আরো অনেক জায়গায় হয়। তুই অন্য কোথা ও যেয়ে থাক। আমাদের ক্ষতি করিস না। ( মিরান)
- না আমি এখানে থাকবো। আমি আর কিছু দেখলে ও কিছু বলবো না। সবার মতো না দেখে থাকবো। ঠিক আছে। ( কাব্য)
- তুই একদিন ছুটি নে। তোকে আমি এই শহরের অলি গলিতে রেল স্টেশন থেকে শুরু করে সব জায়গায় ঘুরিয়ে দেখাবো। দিনে দুপুরে ও মার্ডায় হয়। ( মিরান)
- ঠিক আছে চাচা। আমি সামনের সপ্তাহে ছুটি নিবো। ( কাব্য)
দুজনে উঠে চায়ের দোকানে যেয়ে চা আর রুটি খেলো। আজ বিল টা কাব্যই দিলো। এতোদিন মিরান দিয়ে আসছে।
সকালে কাব্য রেস্টুরেন্টে গেলো। সব কাজ শেষ করে ক্যাশের ওখানে লাবন্যর সামনে দাঁড়িয়ে বললো
- একটা কথা জানার ছিলো। ( কাব্য)
- বলো। ( লাবন্য)
- এই শহর টা নাকি অনেক খারাপ। মানুষগুলো ও নাকি ভীষন খারাপ। ভালো মানুষদের ও নাকি মেরে ফেলে। ( কাব্য)
লাবন্য হেসে দিয়ে কাব্যের দিকে তাকিয়ে
- আমি শুনেছি তবে কখনো সামনে পড়েনি। তবে হ্যা একবার অনেক বড় ঝামেলা ফেস করতে হয়েছে। ( লাবন্য)
- কি ঝামেলা? ( কাব্য)
- কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে চাঁদা দাবি করেছিলো। আমি বড় স্যারের কথা বলার পর ও ওরা নাছোড়বান্দা ছিলো। আমাকে গালিগালাজ করছিলো এমনকি চুলের মুঠি ধরেছিলো৷ ঐ দিনের কথা বললে শরীরে কাটা দিয়ে উঠে। ( লাবন্য)
কাব্য অবাক হয়ে
- তারপর কি হয়েছে? ( কাব্য)
- বড় স্যারকে কল দিলে স্যার ওদের টাকা দিয়ে দেয়। সে কোনো ঝামেলা পছন্দ করে না। তাই আর ঝামেলায় যায় নি। ইচ্ছা করলে সে চাঁদা না ও দিতে পারতো তবে তার মেয়ের কথা চিন্তা করে কোনো শত্রু বাড়াতে চাই না। তার একটা মাত্র মেয়ে কে চিন্তা শুধু । ( লাবন্য)
কাব্য হা হয়ে
- চাদা কি এখনো দেয়। ( কাব্য)
- হ্যা। তবে সবাই দেয় চাঁদা । কেউ বাদ নেই এখানে যতগুলো প্রতিষ্টান আছে। ( লাবন্য)
- কে চাঁদা নেয় এখানে? ( কাব্য)
- রুস্তুম সরদার। লোকটা অনেক ভয়ংকর। ইচ্ছা করলে সবার সামনে মার্ডার করে। এই এরিয়া সে খায়। আর অন্যগুলো অন্যরা। ( লাবন্য)
- ওও ( কাব্য)
- তুমি এতোকিছু শুনছো যে। ( লাবন্য)
- সবার মুখে মুখে শুনি তো তাই। ( কাব্য)
লাবন্য কিছু বলতে যাবে তখনি তামান্না রেস্টুরেন্টের ভেতর ঢুকে বললো
- এতো গল্প করলে কাজ করবি কখন লাবন্য। কাস্টমার তো থাকবে না। ( তামান্না)
কাব্য তামান্না কে দেখে চলে গেলো। লাবন্য বললো
- গল্প না ম্যাডাম। ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছি কাজে যদি ভূল হয় তাহলে এখানে রাখবো না। ( লাবন্য)
- ভূল তো প্রথমে করে ফেলছে। ওকে একটু উপরে পাঠিয়ে দে। ওর ভূল ক্রটি বের করছি। ( তামান্না)
- ঠিক আছে। ( লাবন্য)
তামান্না বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে উপরে গেলো। লাবন্য কাব্যকে ডেকে বললো
- ম্যাডাম তোমাকে ডাকছে। তবে যা বলবে তাই শুনবে। কোনো কথা বলবে না। শুধু মাথা নাড়াবে। সে কিন্তু খুব রাগি। ( লাবন্য)
কাব্য মাথা নাড়ালো। লাবন্য বললো
- তোমাকে আমার সামনে মাথা নাড়াতে বলিনি। ওখানে বলছি৷ ( লাবন্য)
কাব্য উপরে গেলো। রুমে নক দিলো তামান্না আসতে বললো। কাব্য রুমে ঢুকে তামান্নার সামনে দাড়িয়ে তামান্নার দু পাশে তাকিয়ে দেখছে ৪ টা মেয়ে ৩ টা ছেলে বসে আছে। একজন ল্যাপটপ চালাচ্ছে বাকীরা ফোন দেখছে৷ তামান্না কাব্যের দিকে একটা কাগজ দিয়ে বললো
- এই গুলো বাহির থেকে নিয়ে আয়। ( কাব্য)
কাব্য কাগজ টা হাতে নিয়ে চলে যেতে যাবে তখন পাশ দিয়ে টিনা বললো
- টাকা না নিয়ে যাস কেন? টাকা কি তোর বাপ পরিশোধ করবে এগুলোর। ( টিনা)
টিনার কথা শুনে কাব্য মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো। পাশ থেকে রাইসা বললো
- এরকম আবাল ক্ষ্যাত মার্কা কাজের লোক তোরা রাখিস কেন বুঝি না আমি। ( রাইসা)
- আরে বুঝিস না এদের না রাখলে এরা তো না খেয়ে মরবে তাই রেখেছি। ( তামান্না)
- তা ও ঠিক বলেছিস। এদের কুকুর বললে ও চলে। টাকার জন্য সব করতে পারবে ( টিনা)
সবাই হেসে দিলো। কাব্য মাথা নিচু রইলো। রাইসা টাকা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
- টাকা গুলো তুলে নিয়ে যা৷ ৫ মিনিটে আসবি। না হলে খবর আছে। ( রাইসা)
কাব্য টাকাগুলো তুলে নিয়ে চলে গেলো। আয়ান বললো
- তোরা সবাই মিলে ছেলেটাকে এতোগুলো কথা বললি কোনো কথায় বললো না। ( আয়ান)
- আরে ওর মনে ভয় আছে তো। কথা বললে তো জানে ওর কি অবস্থা হবে। ( তামান্না)
- এরকম বলদ আর কি বলবে? ( টিনা)
সবাই কাব্যকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগলো।
নিচ তলায়
ফাইজা কাব্যকে খুজে না পেয়ে লাবন্যর কাছে যেয়ে
- ছোট লোকটা কই। কতগুলো কাজ পড়ে আছে তা না করে কই যেয়ে মরলো। ( ফাইজা)
- ফাইজা মুখে লাগাম টান। বেশি বকা শুরু করে দিছিস। ও ম্যাডামের কাজ করছে। অন্যকে দিয়ে কাজ টা করায় নে। ( লাবন্য)
- ম্যাডাম এসেছে আমাকে বললি না কেন? কখন এসেছে। ( ফাইজা)
- অনেকক্ষণ হলো। ( লাবন্য)
ফাইজা আর কিছু না বলে উপরে গেলো। রুমে নক করে ভেতরে ঢুকলো। তামান্না ফাইজাকে বললো
- কি রে তোর দিনকাল কেমন কাটছে? ( তামান্না)
- আর ভালো কই। যাও ভালো ছিলাম এখন আর ভালো থাকতে পারছি না। ( ফাইজা)
- কেন তোর আবার কি হলো? ( তামান্না)
- ঐ যে ক্ষ্যাত ফকিন্নিটি টাকে কাজে রেখেছে আমার তো ওকে দেখলে গা জ্বলে। ( ফাইজা)
- গা না জ্বলে সেই কাজ করে নে। ( তামান্না)
- সবকিছুই করি। এতো অপমান করি তাও যায় না। কুকুরের মতো পড়ে আছে৷ ( ফাইজা)
- আমার হাতে পড়েছে। আমি দেখ ওর কি অবস্থা করি। এতো চিন্তা করিস না। পালালো বলে। ( তামান্না)
- পালালে তো ভালো ই হবে৷ ( ফাইজা)
ফাইজা কাব্যের নামে অনেক কিছু বানিয়ে বলে চলে গেলো। তামান্নার রাগে ফুসতে লাগলো।
৪০ মিনিট পর
কাব্য সবকিছু নিয়ে রুমে এসে টেবিলের উপর রাখতে ঠাস ঠাস করে চড় পড়লো কাব্যের গালে........
চলবে
Ek villian
Part 4
লেখা
Meherab Kabbo