---আচ্ছা,শুন তুই আদিরা পাখি মানে আদির বোনের সাথে ফাস্ট প্রেমের অভিনয় করবি তারপর কিছুদিন পর ওর সম্মান নষ্ট করবি যাতে সমাজে মুখ দেখাতে না পারে।
---হঠাৎ এই ডিসিশন কেনো নিলি?
তারা রেগে গিয়ে রাফসানের কলার চেপে ধরে বললো,,,
----এতো প্রশ্ন করতে তোকে এখানে আমি ডাকিনি!তুই তোর কাজ করবি আর টাকা নিয়ে এখান থেকে চলে যাবি যেনো কেউ এর কানিটুকু ও অবধি জানতে না পারে।
---ঠি....ঠিকাচ্ছে।
রাফসান জানে তারার সাথে তর্ক করা মানে তার জিবনটা যাওয়া।সে একটাবার রেগে গেলে তাকে বেশি প্রশ্ন করলে এর ফল ভালো হয় না তা রাফসান ভালো করেই জানে।
তারপর তারা গেলো নিহানের কাছে,,
----তোকেও একটা কাজ করতে হবে!
তারা রাফসানের কলার চেপে ধরেছে সেটা দেখে নিহান ভয় পেয়ে গেছে। আর ভয়ে ভয়ে বললো,,,,
---কি......কি কাজ?
---শুন এদিকে আয়!
নিহানের কাধেঁ হাত রেখে তারা জানালার কাছে গেলো।
---তুই ওই কাজের মেয়েটা যার সাথে আদির বিয়ে হয়েছে, আমার আদিকে কেড়ে নেওয়ার আমার কাছ থেকে প্লেন করেছে তাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিবি।
----ঠিক আছে।
----আজ থেকে তুই ওর উপর নজর রাখবি, সুযোগ ফেলে কাজটা শেষ করে আসবি যেনো ওকে আর দেখা না যায়। বড্ড বাড় বেড়েছে মেয়েটা কাজের লোক হয়ে কথায় আমার সাথে তর্কে নামে।ওর দিন শেষ হয়ে এসেছে।
তারা একটা শয়তানি হাসি দিলো।আদির চোখে আলো এসে পড়ে আর তাতে তার ঘুম ভেঙে যায় আড়মোড়া দিয়ে চোখ খুলে দেখে সোফায় শুয়ে আছে আর গায়ে একটা চাদর।
---আমি এখানে আসলাম কিভাবে? এই চাদর কে দিলো আমার গায়ে।ওহ মনে পড়েছে কাল সোয়ার গান শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম খেয়ালই নেই। হয়তো ওনিই চাদরটা দিয়ে গেছে আমার গায়ে।
আদি উঠে চাদরটা বিচানায় রেখে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।অফিসের জন্য রেডি হয়ে চলে এলো নিচে।গিয়ে দেখলো সোয়া কিচেনে নেই না দেখে ভয় পেয়ে গেলো আদি। ড্রয়িংরুমে ও নেই কিচেনেও নেই কোথায় গেলো তাহলে। আজকাল আদি খুবই ভয় পাচ্ছে সোয়াকে নিয়ে, বুকের ভিতরে কু ডাক গাইছে। মনে হচ্ছে সোয়া কোথাও চলে যাবে। চলে গেলে এই একা বাড়িতে আদি থাকবে কীভাবে?একা থাকলে তার দম বন্ধ হয়ে আসে। সোয়া আছে তাও তার সাথে দু চারটা কথা বলা যায়। এই নিয়ে আদির খুব চিন্তা হচ্ছে।
ব্লেজারটা হাত থেকে চেয়ারে রেখে দৌড়ে গেলো বাড়ির বাইরে আসে পাশে কোথাও নেই।বাগানে যেয়ে দেখে কোন হলুদিয়া বউ এখানে দাড়িয়ে গাছে পানি দিচ্ছে।
.
!!!
আদি চোখ সরাতে পারছে না তার থেকে হলুদ শাড়ি খোলা চুলগুলো বাতাসে উড়ছে। হালকা গোলাপী ঠোঁট দারুণ লাগছে।একদম তার স্বপ্ন দেখা রাজকুমারীর মতো।
আদি এক কদম এগোলো আবার থেমে গেলো আবার এগোলো ভয় হচ্ছে তার কাছে কি যাবে আদি। মন চাইছে তো গিয়ে জরিয়ে ধরে একটা কপালে চুমু খেতে।ভাবছে যাবে আবার ভাবছে যাবেনা।
শেষমেষ গেলো গিয়ে আলতো করে সোয়াকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো।নিজের দিকে ঘুরিয়ে চোখের সামনে আসা চুলগুলো সরিয়ে কপালে চুমু খেলো তারপর দু নয়ন জোড়ায়। ঠোঁটে একটা চুমু খেতে গেলেই সোয়া ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে আদিকে ভিজিয়ে দেয়।
---এটা কি করলে?
---একদম ঠিক আছে, কি করতে গেলেন এখন।
---একটু তোমার লিপস্টিকই তো খেতে গেলাম আর কি।
দুষ্টুমি হাসি মুখে রেখে বললো আদি। সোয়া লজ্জায় শেষ। আদি ধ্যান ভাঙ্গলো কি ভাবছেও এইসব সোয়াকে নিয়ে কদিন পর তাদের ডিবোর্স হয়ে যাবে। কোথায় থাকবে আদি আর কোথায় সোয়া।আদির হঠাৎ কি হলো সোয়াকে নিয়ে এতো ভাবছে কেনো। ভালোবাসা জন্মেছে নাকি, না এটাকে ভালোবাসা বলে না। এইসব কিছু সময়ের জন্য আবেগ।
সোয়াকে আদিকে বললো,,,,
---আপনি এখানে?
---হুম, বাড়িতে খুজলাম ফেলাম না তাই এখানে খুজতে চলে এলাম।
---ওহ!
----কি করছেন এখানে?
---এইতো পানি দিচ্ছি ফুল গাছে।
---আপনার ফুলগাছ ফেবারিট।
----হুম অনেক প্রিয় আমার। রোজ সকালে তাই এখানে আসি।
----আচ্ছা, ভালো। আমার মায়ের ও খুব প্রিয়।
----হুম জানি। আচ্ছা চলেন আপনি নাস্তা করে নিবেন।
---হ্যাঁ।
সোয়া আদিকে নাস্তা দিলো। তারপর কিচেনে চলে যেতে নিলে,,,
---আপনি নাস্তা করবেন না?
----করবো আপনি খেয়ে নেন তারপর!
---আমার একা খেতে বসতে ভালো লাগেনা। আপনিও আসুন?
----না না আমি পড়ে খাবো। আপনি খান?
----আমার সাথে খেতে বসলে আপনার এমন কোন মহাভারত অশুদ্ধ হবে শুনি?
---না মানে আসলে?
----কি?
---আমাদের নিয়ম অনুসারে স্বামীরা আগে খেতে হয় তারপর স্ত্রী। তাতে স্বামীর মঙ্গল হয়।
যে মেয়েটাকে আদি বউ হিসেবে মানে না সেই মেয়েটা আদির মঙ্গল কামনার জন্য এক সাথে বসে নাস্তা করেনা।কি অদ্ভুত মেয়ে এতো কষ্ট পেলো তাও আদির মঙ্গল চায়।
---আপনাকে বসতে বলছি না হলে কিন্তু আমি না খেয়ে চলে যাবো।
---আচ্ছা,ঠিক আছে বসছি।
দুজনে নাস্তা করে নিলো আদি অফিসে চলে গেলো।বাড়ির বাজার করে যে কাকু ওনার ওয়াইফ মারা গেছে তাই বাজার করার মতো লোক নেই।
----দিদি আমি বাজারে যাচ্ছি।
----এতো না করলাম বৌমনি তাও যাচ্ছো। ঠিক আছে যাও সাবধানে!
---হুম।
সোয়া একটা টেক্সি নিয়ে বাজারে গেলো। বাজার শেষে আসার সময় রাস্তা দিয়ে কেউ ফলো করছে তাকে। গাড়িতে বসে আছে মুখ ডাকা দেখা যাচ্ছেনা তার মুখ। সোয়া জোরে হাটতে লাগলো।
একটা সময় গাড়িটা জোরে ড্রাইভার চালায় আর সোয়াকে রাস্তায় একা পেয়ে চাপা দিয়ে দিলো।
.