এক ভিলিয়ান পর্ব ৮

 বার একেক ধরনের এক এক কথা বলতে বলতে  এম ডি স্যার ভেতরে ঢুকতেই সবাই অবাক হয়ে কাব্যের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো।  সমস্যা টা সমাধান হয়ে গেছে৷ কাব্য উঠে দাঁড়িয়ে মেয়েটাকে বললো

- এসব কাজে হতাশা হলে হবে না।  সমস্যা হয়েছে ।  সমস্যাটা বুঝতে হবে।  ঠান্ডা মাথায় কাজ করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।  ( কাব্য) 

কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে দেখলো সব ঠিক হয়ে গেছে।  তথ্যের ডিভাইস চলে এসেছে৷   কাব্য সেখান থেকে চলে গেলো।  এম ডি স্যার বললো
- এখানে এতো হট্টগোল কিসের।  কোনো সমস্যা হয়েছে।  ( এম ডি) 

এম ডি র কথা শুনে  একজন বললো, ইয়ে মানে স্যার

তখনি এম ডি র ফোনটা বেজে উঠলো।  এম ডি কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে পুরুষ কন্ঠে,  এম ডি এবারের মতো বেঁচে গেলি।  পরের বার আর বাঁচবি না।  তোর ডিভাইস সব হ্যাক করে নিবো। 

কথাটা বলেই কলটা কেটে দিলো।  এম ডি অবাক হয়ে গেলো।  এম ডি ফোনটা রেখে জিঙ্গেস করলো
- কোনো কিছুতে সমস্যা হয়েছে।  ( এম ডি ) 

সেই মেয়েটি বললো,  স্যার পুরো সিস্টেম হ্যাক হয়ে গেছিলো।  আমরা অনেক চেষ্টা করে যখন হাল  ছেড়ে দি তখন ডেলিভারি বয় হ্যাকারের থেকে সব ফিরিয়ে এনে দিছে।  আর কোনো সমস্যা নেই।

এমডি স্যার রাগান্বিত হয়ে
- আমার সিকিউরিটি এতো নর্মাল কেন?  সিকিউরিটি শক্ত হচ্ছে না কেন?   হ্যাকার রা আমাদের প্রতিষ্ঠান টার্গেট করেছে।  সিকিউরিটি শক্ত করতে যদি বাহির থেকে লোক আনা লাগে আনো৷  আমার সিস্টেম জানো হ্যাকার রা হ্যাক না করতে পারে৷ ( এম ডি) 

এম ডি র কথায় সবাই মাথা নিচু করে নিলো।  এম ডি র পিএইচ বললো
- স্যার আমার জানা মতে কয়েকজন আছে ওরা প্রফেশনাল।  ওরা পারবে। ( পি এইচ) 
- তাহলে খবর দাও।  যত টাকা লাগে দাও।  ( এম ডি) 

এম ডি কথাটা বলে চলে গেলো।  পি এইচ পিছে পিছে গেলো৷ সবাই বসে নিজেদের ভূলের জন্য মেয়েটার কাছে ক্ষমা চাচ্ছে।  কাব্যকে প্রশংসা করছে। 


**
কাব্য রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে  লাবন্য বললো
- এতো লেট  হলো কেন?  ( লাবন্য) 

কাব্য এম ডি এর সব কথা লাবন্যকে বললো। লাবন্য শুনে অবাক হয়ে
- তুই কি আস্ত বলদ।  এমন সুযোগ হাত ছাড়া করে।  বকশিস দিছিলো নিতিস।  সে রাগ করে যদি অর্ডার ক্যানসেল করে দেয়।  ( লাবন্য) 
- আমাকে তো আপনি বেতন দেন৷  আমি কেন অন্যের টাকা নিবো ফ্রি তে। ( কাব্য) 
- আরে বোকা বড়লোকেরা খুশি হয়ে টাকা দেয় এটাকে বকশিস বা টিপস্ বলে।  ওদের টাকা নিলে সমস্যা নেই৷ যা করেছিস ভালো করেছিস।  প্রমোশন টা বুঝি শেষ হয়ে গেলো। ( লাবন্য) 

কাব্য কিছু বললো না।  লাবন্য চিন্তায় পড়ে গেলো।  বড় স্যারের কাছে যদি বলে আমার চাকরি নিয়ে ও টানাটানি।  কি হবে এখন। ফাইজা লাবন্য কে চিন্তা করতে দেখে
- কি রে তোর কি হয়েছে?( ফাইজা) 
- আমাদের সবার প্রমোশন টা গেলো বুঝি এই।  চাকরি থাকবে কি না জানি না৷  ( লাবন্য) 

ফাইজা অবাক হয়ে
- কেন কি হয়েছে? 
লাবন্য  ফাইজাকে সব বললো।  ফাইজা সবটা শোনার পর রাগে
- বলদের বা*চ্চা করছে টা।  ওকে কেন পাঠাতে গেলি।  আমাকে পাঠালে তো পারতি।  শেষ চাকরি আমাদের।  তোকে আমি বলেছি ওকে এতো লায় দিস না।  গ্রাম্য শালা গ্রাম্যই থাকবে।  এতো বড়ো সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করে। ( ফাইজা) 

ফাইজা কাব্যকে বকা দিতে লাগলো।  লাবন্য চুপচাপ শুনতে লাগলো।  ফাইজা রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে কাব্যের সামনে দাঁড়িয়ে
- ফকিন্নি বলদ গাধা আমদের চাকরি যদি চলে যায় তাহলে তোরে এই পৃথিবী থেকে উপরে পাঠিয়ে দিবো সোজা।  আমাকে তুই চিনিস না।  ( ফাইজা) 

কাব্য ফাইজার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো।  ফাইজা কাব্যকে হাত দিয়ে ডাক্কা মেরে চলে গেলো। 

কিছুক্ষণ পর
লাবন্য কিচেনে ঢুকে
- সব কিছু সন্ধ্যার ভেতর গুছিয়ে ফেলতে হবে। ম্যাডাম পার্টির আয়োজন করেছে ক্লাবে যেতে হবে।  সবাই রেডি হয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়াবে ।  ( লাবন্য) 

পার্টির কথা শুনে সবাই খুশি হয়ে গেলো।  ফাইজা বললো
- কি বলছিস?  ম্যাডাম আমাদের যেতে বলছে। ( ফাইজা) 
- হ্যা।  ( লাবন্য) 
- উফ সেই  আনন্দ হবে আজকে।  কতোদিন পর পার্টিতে যাবো।  আমার কি যে খুশি লাগছে। ( ফাইজা) 

লাবন্য ভেতরে চলে আসলো।  কাব্যের সামনে দাঁড়িয়ে
- পার্টিতে যাবি তুই।  ( লাবন্য) 
কাব্য বোকার মতো
- কিসের পার্টি।  কি করে ওখানে?  ( কাব্য) 
- ওহ তুই  তো এসব বুঝবি না।  তুই তো গ্রামে থাকিস।  তোকে বলে লাভ নেই। একটা কাজ করিস। ( লাবন্য)   
- কি কাজ?  ( কাব্য) 
- নতুন জামা কাপড় পড়ে এখানে চলে আসবি। ( লাবন্য) 
- আমার তো নতুন জামা কাপড় নেই।  ( কাব্য) 
- যা আছে পড়ে আছিস।  ( লাবন্য) 

লাবন্য কথাটা বলে ক্যাশে যেয়ে বসলো।  ক্যাশে বসে ভাবছে,  কাব্য তো পার্টি সম্পর্কে কিছু বুঝে না৷ ওকে নিয়ে গেলে যদি অপমান হয়।  না  ওকে নেওয়া যাবে না৷  ম্যাডামকে ফোন করে জানায়। 

লাবন্য ফোনটা নিয়ে তামান্নাকে কল করলো।  তামান্না কল রিসিভ করতেই লাবন্য বললো
- ম্যাডাম পার্টিতে কি আমরা সবাই আসবো৷( লাবন্য) 
- হ্যা।  কেন?  ( তামান্না) 
- না মানে কাব্যকে রেখে আমরা সবাই আসতে চাইছিলাম আর কি?  ( লাবন্য) 
- কেউ জানো বাদ না যায়।  কাব্যকে নিয়ে জানো আসা হয়। ( তামান্না) 

তামান্না কলটা কেটে দিলো।  লাবন্য দূর চিন্তায় পড়ে গেলো।।। 


**
সন্ধ্যার পর,
এমডির পিএইচ এর নেতৃত্বে ১০ জনের একটা টিম কোম্পানি আসলো।  তাদের নিয়ে সবটা বুঝিয়ে দিলো।  সিকিউরিটি সিস্টেম আরো শক্ত করে ঠিক করতে।  যাতে অন্য কেউ প্রবেশ করতে না পারে।  পিএইচ এর কথা মতো সবাই কম্পিউটার ওপেন করলো।  কম্পিউটারের সিকিউরিটি দেখার পর কিছুক্ষণ কী বোর্ড চিপে চলে যেতে যাবে তখন পি এইচ  বললো
- তোমাদের পেমেন্ট নিয়ে যাও।  ( পি এইচ)

টিমের প্রধান বললো,  এটা আমাদের ফাস্ট কাজ এই কোম্পানি তে তাই পেমেন্ট নিবো না।  ফ্রি তে করে দিলাম।

কথাটা বলা শেষে সবাই চলে গেলো।  পি এইচ অবাক হয়ে গেলো। 

**
রেস্টুরেন্ট থেকে সবাই চলে গেলো।  যে যার মতো করে সেজেগুজে রেস্টুরেন্টের সামনে এসে দাঁড়ালো  সবাই।   কিছুক্ষণ পর লাবন্য ও আসলো।  লাবন্য আসার পর পরই কাব্য আসলো।  কাব্য সবাইকে দেখে অবাক হয়ে
- আপনাদের সবাইকে তো অনেক সুন্দর লাগছে। ( কাব্য) 
কাব্যের কথা শুনে ফাইজা বললো
- তোরে তো জোকারের মতো লাগছে।  তুই পার্টিতে যাচ্ছিস নাকি ভিক্ষা করতে। হাহাহাহা ( ফাইজা) 


ফাইজার কথা শুনে কাব্য মাথা নিচু করে নিলো।  লাবন্য ফাইজাকে চোখ গরম দিলো।  ফাইজা চুপ হয়ে গেলো।   ওদের সামনে একটা মাইক্রো এসে থামলো৷  সবাই গাড়িতে উঠে গেলো।  লাবন্য কাব্যকে উঠতে বললো।  কাব্য গাড়িতে উঠতেই দরজা আটকিয়ে দিলো।  কাব্য ঠান্ডা অনুভব করে
- এতো ঠান্ডা কেন গাড়ির ভেতর?  ( কাব্য) 

কাব্যের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো।  ফাইজা বললো
- তুই যেখানে বসা তার নিচে বরফ রাখা তাই ঠান্ডা লাগছে।  হাহাহাহা ।  ( ফাইজা) 

কাব্য ফাইজার কথা শুনে নিচে বরফ খুজতে লাগলো।  সবাই গাড়ির ভেতর মজা করতে লাগলো।

রাত ৯ টা
গাড়ি এসে ক্লাবের সামনে দাড়ালো।  সবাই গাড়ি থেকে নেমে ক্লাবের ভেতর যেতে লাগলো।  ক্লাবের প্রবেশ মুখে তামান্না দাঁড়িয়ে সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছে।  লাবন্যদের জানালো।  কাব্য কে দেখে তামান্না বললো
- তোর কি আর জামা কাপড় ছিলো না।  ( তামান্না)
- এটা ভালো না।  ( কাব্য) 
- লাবন্য ওকে ভেতরে নিয়ে যাও।  আমি আসছি। ( তামান্না) 

লাবন্য কাব্যকে নিয়ে ভেতরে গেলো।  ভেতর অনেক লোকজন।  কাব্য অবাক দেখছে সবাইকে।  আর নিজের ড্রেস এর দিকে দেখলো।  সবাই কত সুন্দর সুন্দর নতুন জামা কাপড় পড়ে আসছে আর আমি পুরাতন৷ 

ফাইজা নিজের মতো করে ইনজয় করতে লাগলো।  লাবন্যর পাশে কাব্য দাঁড়ানো ।  তামান্না এসে লাবন্যকে বললো
- তুৃমি যাও ওদের নিয়ে ইনজয় করো।  এখানে  সব কিছুর আয়োজন আছে।  ( তামান্না) 

লাবন্য কাব্য কে নিয়ে যেতে যাবে তখন তামান্না বললো
- ও আমার সাথে থাকুক।  তুমি যাও।  ( তামান্না) 

লাবন্য চলে গেলো।  তামান্না কাব্য কে নিয়ে মাঝখানে গেলো৷  সেখানে তামান্নার বন্ধুবান্ধব সবাই রয়েছে ।  কাব্য কে নিয়ে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে
- তোদের সাথে এক জোকারের পরিচয় করিয়ে দি।  গ্রাম থেকে উঠে এসেছে৷  পার্টিতে কি ড্রেস পড়ে এসেছে দেখ।  ( তামান্না) 

সবাই কাব্যের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো ।  আয়ান বললো
- কি দরকার ছিলো এসব ফকিন্নিকে পার্টিতে আনার।  স্টাফ দের না আনলে পারতি।  ( আয়ান)
- আরে এ তো আজকে আমাদের পার্টির জোকার ওয়েটার বয়।  আমাদের সব কাজ করে দিবে৷  আমরা ইনজয় করবো।  ( তামান্না) 

রাইসা উঠে এসে কাব্যের গায়ে হাত দিয়ে
- কি রে ফকিন্নি এমন পার্টি জীবনে দেখেছিস।  যদি কোনো রকম ভূল করিস কাজে তাহলে তোর অবস্থা কি হবে বুঝতে পারছিস।  ( রাইসা) 

কাব্য সরে যেয়ে মাথা নাড়ালো।  নিলা বললো
- এ ও কি বোমা নাকি তামান্না ।  কথা বলে না কেন?  ( নিলা) 
- ও কথা বলার সাহস পায় না৷  আমার গোলাম তো ভয় তো করবেই।  তোদের যা লাগবে বলবি ও এনে দিবে। ( তামান্না) 
- তাহলে তো  ভালোই হবে৷  ওকে দিয়ে আগে জুস আনায়।  ( টিনা) 

তামান্না কাব্যের দিকে তাকিয়ে
- কি রে কথা কানে যায় না কি আনতে বললো? যা।  ( তামান্না) 

তামান্নার কথা শুনে কাব্য মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো।  সবাই মিলে একসাথে গানের তালে তালে নাচতে ব্যস্ত ইনজয় করছে সবাই৷  কাব্য একটা ট্রে তে করে জুসের গ্লাস নিয়ে আসতে লাগলো।  একজনের সাথে ডাক্কা লাগতে কাব্যের গালে চড় বসিয়ে দিলো।  কাব্য চড় খেয়ে সামনের দিকে গেলো।  যেয়ে  দাঁড়িয়ে রইলো।  কোনো কথা বললো না।  সবাই এক এক করে জুসের গ্লাস নিয়ে খেতে লাগলো আর নাচ করতে লাগলো।  লাবন্যর চোখ এড়ালো না৷ পার্টিতে ও কাব্য কে ছাড়লো না।  পার্টিতে কাব্যকে অত্যাচার করতে লাগলো।  একেক সময় এক এক ধরনের করাতে লাগলো।  লাবন্যর এটা আর নিতে পারলো না।  লাবন্যকে কিছু করতে হবে একটা।  লাবন্য তামান্নার কাছে যেতে দেখলো তামান্না কাব্যের কলার ধরে
- ফকিন্নির বাচ্চা তোর সামনে রুস্তম সরদার আমাকে অপমান করছিলো।  আমি তোকে পার্টিতে এনে সবার সামনে অপমান করলাম।  আমার ইগো সম্পর্কে তোর জানা নেই।  তুই তো ফকিন্নি তুই এসবের কি বুঝবি।  অপমান কি বুঝবি।  ( তামান্না) 

তামান্নার কথা কাব্য চুপচাপ সহ্য করে নিলো। তামান্না কাব্যকে ডাক্কা মারলো।  টিনা পিছন থেকে কাব্যের কলার ধরে টেনে নিচে ফেলে দিলো।  নাচের তালে ইচ্ছা করে পাড়াতে লাগলো।  কাব্য নিচে পড়ে হাত দিয়ে সবার পাড়া ঠেকাতে লাগলো।  লাবন্য তামান্না কে বললো
- ম্যাডাম আমার শরীর ভালো লাগছে না৷  আমি চলে যায়।  ( লাবন্য) 
- এখনি যাবা।  ( তামান্না) 
- হ্যা।  কাব্যকে যদি আমার সাথে পাঠাতেন।  কালকের অর্ডার টা কি দিছে ওটা জানতে হবে।  ( লাবন্য) 
- ঠিক আছে নিয়ে যাও৷  ( তামান্না) 

সবাই নাচ থামিয়ে দিলো। লাবন্য নিচে বসে কাব্যকে ধরে তুলে কাব্য কে নিয়ে ক্লাব থেকে বের হয়ে গেলো।  সবাই মিলে হাসাহাসি মজা করতে লাগলো।  টিনা বললো
- আজকে ফকিন্নিকে নিয়ে সেই মজা হলো। ( টিনা) 
- একটু বেশি মজা করা হয়ে গেছে আজ।  বেচারা কষ্ট পেয়েছে। ( নিলা) 
- পাক৷  ওর মতো ফকিন্নি সব সময় আমাদের পায়ের তলায় থাকে।  ( তামান্না) 

সবাই কথা বলছে আর ইনজয় করছে। 

লাবন্য কাব্যকে নিয়ে রাস্তার পাশে এসে বসলো।  কাব্যের জামা ছিঁড়ে গেছে।  কাব্য হাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে লাগলো।  কাব্যের গালে চড়ের দাগ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।  লাবন্য কাব্যের এমন অবস্থা দেখে
- আমারই ভূল হয়েছে তোকে পার্টিতে নিয়ে আসাটা।  আমার আগে বোঝা উচিত ছিলো।  আমার জন্য তোকে আজ এমন অপমান হতে হলো। ( লাবন্য) 
- আমাদের আর অপমান।  ওরা আমাদের মানুষ বলে মনে করে না।  আমরা কেমন জানি ওদের চোখে কুকুরের থেকে ও খারাপ কিছু।  ( কাব্য) 

লাবন্য পিছনের দোকান থেকে একটা আইসক্রিম কিনে এনে কাব্যের গালে ধরে
- তোর অনেক লেগেছে রে ।  ( লাবন্য) 
- না লাগেনি।  ( কাব্য) 
- ব্যথা কমে যাবে।  একটা কথা বলবি না।  ( লাবন্য) 

লাবন্য কাব্যের গালে আইসক্রিম ডলে দিচ্ছে।

তখনি কয়েকটা বাইক এসে লাবন্যদের সামনে এসে দাড়ালো।  একজন বললো,  কি বেবি বফ কে মেরে এখন আদর করা হচ্ছে। আইসক্রিম একটা কেন আমাদের সাথে শেয়ার করো।  আমাদের একটু আদর করো। 

বাইকের সবাই মিলে বাজে বাজে কথা বলতে লাগলো।  কাব্য সবার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালো।  ওদের কথা শুনে কাব্যের রাগ বেড়ে গেলো৷  লাবন্য ভয়তে কাব্যের হাত ধরে পিছে লুকিয়ে আছে৷  ছেলেগুলো বাজে কথা বলতে লাগলো। 


**
ফাইজা লাবন্যকে না দেখে লাবন্যকে খুঁজতে লাগলো।  ভিড়ের ভেডর লাবন্যকে পেলো না।  ফাইজা তামান্নার কাছে যেয়ে
- ম্যাডাম লাবন্য কে দেখছেন? ( ফাইজা)
- লাবন্য চলে গেছে  ফকিন্নি টা কে নিয়ে?  তোমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো।  ( তামান্না) 
- না ম্যাডাম ঠিক আছে সব।  আমাদের না জানিয়ে চলে গেলো।  আমরা বাসায় ফিরবো না। ( ফাইজা) 
- চিন্তা করো না গাড়ি আছে৷  গাড়িতে পৌঁছে দিবে৷  ইনজয় করো সারা রাত ধরে। ( তামান্না) 

ফাইজা তামান্নার ওখানে থেকে সাইডে চলে এসে ফাইয়াজ কে কল করলো৷  ফাইয়াজ কল রিসিভ করতে ফাইজা বললো
- লাবন্য কি তোমাকে কল দিছিলো? ( ফাইজা) 
- না কেন?  ( ফাইয়াজ) 
- লাবন্য আমাদের কিছু না বলে কাব্যকে নিয়ে বের হয়ে গেছে। ( ফাইজা) 
- আমাকে তো তেমন কিছু বলে নি।  ( ফাইয়াজ) 
- ও আমার বান্ধবী হয়ে ইদানীং কাব্যের জন্য লাবন্যর মাথা ব্যথা বেশি।  ওকে কিছু বললে কেমন জেনো ওর জ্বলে বেশি।  এখন আবার আমাদের না জানিয়ে ওকে নিয়ে চলে গেলো।  ফোনটা ও বন্ধ করে রাখছে।  ( ফাইজা) 
- ঠিক আছে আমি দেখছি বিষয়টা। ( ফাইয়াজ) 

ফাইয়াজ কলটা কেটে দিলো।  ফাইজা মুখে শয়তানি একটা হাসি দিয়ে বলছে,  আমাদের একা ফেলে চলে যাওয়া।  বুঝবি এখন।  ফাইজা  সবার মাঝে  যেয়ে  নাচতে লাগলো। 


**
ছেলেগুলো খুব বাজে ভাবেই উত্ত্যক্ত করতে লাগলো।  কেউ কেউ তো লাবন্য শরীরে হাত দিতে যাবে কাব্য তাদের হাত লাবন্যর শরীর পর্যন্ত যেতে পারলো না।  বাইকের পিছন থেকে সবাই নামলো কাব্যের সামনে দাঁড়িয়ে,  একে ধরে বাঁধ ।  রাতের পরীটা কে নিয়ে চল৷  আজ অনেক আনন্দ হবে। 

সবাই এক সাথে হেসে দিলো।  কাব্যের কলারে হাত দিতে  শো শো শব্দে ১৬ টা কালো কালারে গাড়ি এদিকে আসছে।  সবাই পিছনে তাকিয়ে গাড়ি দেখে থেমে গেলো।  গাড়ি গুলো এসে থামলো।  গাড়ির ভেতর  হকি হাতে কয়েকজন  নেমে এদিকে এগিয়ে আসছে।  কাব্য লাবন্য অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।  ছেলে গুলো বাইকে উঠে  পালালো।  গাড়ির ভেতর থেকে একজনকে নামতে কাব্য চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে পড়লো। লাবন্য হা হয়ে গেলো............

চলবে........ 

Ek villian

Part 8

Writer
Meherab Kabbo  
 
এক ভিলিয়ান পর্ব ৮  

Previous Post Next Post