এম ডি গাড়ি থেকে কাব্য চোখ বড় বড় করে দিয়ে তাকিয়ে পড়লো এম ডির দিকে। এম ডি র লোক জন পাশ দিয়ে ঘিরে আছে। এম ডি কাব্যের সামনে দাঁড়িয়ে
- তোমরা দুজন ঠিক আছো। ( এম ডি)- জ্বি স্যার। ( কাব্য)
লাবন্য অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। এই ব্যক্তি কে লাবন্য চিনে না। কাব্য কিভাবে চিনলো। লাবন্যর মনে অনেক প্রশ্ন দেখা দিলো।
এম ডি কাব্য র জামা ছিঁড়া দেখে
- ছেলে গুলো এ কি অবস্থা করেছে। এতো রাতে বাহিরে কেন তোমরা। ( এম ডি)
লাবন্য কাব্যের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো
- কে এই লোক। ( লাবন্য)
কাব্য লাবন্যর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো
- ইনি হচ্ছেন সেই কোম্পানির মালিক। নাম এম ডি সংক্ষিপ্ত। অর্ডার দিছিলো যে। ( কাব্য)
এমনি ওদের দুজনকে কথা বলতে দেখে বললো
- তোমাদের কিছু জিঙ্গেস করেছি। ( এম ডি)
লাবন্য মুখে হাসি নিয়ে
- আমরা পার্টি থেকে বাসায় ফিরছিলাম। পথে ছেলেগুলো পথ আটকিয়ে ডিস্টার্ব করতে ছিলো। ( লাবন্য)
এম ডি অবাক হয়ে
- তোমরা পার্টিতে ও যাও। ( এম ডি)
- ম্যাডাম আমাদের সবাইকে নিয়ে পার্টি দিছিলো। সেখান থেকে। সবার সাথে আমরা পরিচিত হলাম এই আর কি? ( লাবন্য)
- ও আচ্ছা। ঠিক আছে আমার গাড়ি তোমাদের বাসায় পৌঁছে দিবে৷ দুজনকে একা যেতে হবে না ( এম ডি)
- ঠিক আছে। ( লাবন্য)
কাব্য আর লাবন্য প্রাইভেট কারে উঠে বসলো। এম ডি র সাথে ১৩ গাড়ি চলে গেলো। কাব্যদের সাথে দুটো গাড়ি গেলো। কাব্য কই থাকে বার বার জিঙ্গেস করলো। কাব্য যে ফুটফাতে থাকে এটা বললো না। বললো শুধু লাবন্য কে আগে নামিয়ে দিয়ে তারপর ও নামবে। যেমন কথা তেমন কাজ। গাড়ি এসে লাবন্যদের বাসার সামনে এসে থামলো। লাবন্য গাড়ি থেকে নামতে দেখলো বাসার সামনে ফাইয়াজ দাঁড়িয়ে আছে। লাবন্য গাড়ি থেকে নেমে কাব্যকে হাত নাড়িয়ে বায় বললো। গাড়ি গুলো চলে গেলো। ফাইয়াজ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে গাড়িগুলো দেখে। লাবন্য পিছন ফিরতেই ফাইয়াজ সামনে দাঁড়িয়ে
- তাই তো বলি কাব্যকে নিয়ে এতো মাটামাটি কেন? কাব্য র গাড়ি বাড়ি আছে আমার কিছু নেই এই জন্য দুজনে আলাদা করে ( ফাইয়াজ)
ফাইয়াজের কথা শেষ করতে দিলো না লাবন্য। ঠাস করে গালে চড় বসিয়ে দিলো লাবন্য। ফাইয়াজ পুরো হা হয়ে গেলো। লাবন্য বললো
- ছিহ্ তোর মনমানসিকতা এতোটা নিচু। এতোটা নিচু কবে করলি। ( লাবন্য)
লাবন্য কথাটা বলে ফাইয়াজের পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। ফাইয়াজ থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। লাবন্য এটা কি করলো? ফাইয়াজ এমনটা কখনো কল্পনা করে নি। লাবন্য এভাবে চড় মেরে কথা বললো।
**
গাড়ি রেস্টুরেন্টের কাছে আসতে কাব্য বললো, আমাকে এখানে নামিয়ে দেন৷ আমি বাসায় চলে যাবো।
কাব্যর কথায় গাড়ি থামলো। কাব্যকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িগুলো চলে গেলো। কাব্য নিজের জায়গায় যেতে দেখলো মিরান জেগে আছে৷ মিরান কাব্যের অবস্থা দেখে বললো,
- কোন মেয়ে তোর এই অবস্থা করলো। পার্টি তে যাওয়ার শখ মিটছে৷ ( মিরান)
কাব্য কিছু বললো না৷ মুখ টা কালো করে অন্য পাশ হয়ে শুয়ে পড়লো। মিরান কাব্যকে বললো
- কি হয়েছে তোর বল তো? কোনো ঝামেলা হয়েছে। জামা ছিড়লো কিভাবে৷ ( মিরান)
- কিছু না৷ আমার মতো ফকিন্নি রা কি পার্টি তে যেতে পারে নাকি। ( কাব্য)
মিরান উঠে বসে
- কে বলেছে? তোরে আমি কাল রাইতে সব থেকে দামি ক্লাবে নিয়ে যাবো। এতো চিন্তা করিস না। ( মিরান)
- না আমি কোথা ও যাবো না। ( কাব্য)
- তা কাল দেখা যাবে৷ ঘুমা এখন। ( মিরান)
মিরান শুয়ে পড়লো।
**
লাবন্য শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে বেলকনিতে এসে দেখলো ফাইয়াজ বাইকের উপর বসে সিগারেট হাতে ফোন টিপছে। লাবন্য বেলকনি থেকে রুমে যেয়ে বসলো। আবার উঠে জানালা দিয়ে দেখলো ফাইয়াজ বসে আছে৷ লাবন্য রুম থেকে বের হয়ে গেইট খুলে ফাইয়াজের সামনে দাঁড়িয়ে
- কি সমস্যা কি? এখানে বসে সিগারেট খাওয়া হচ্ছে। এটা ভদ্র বাড়ি। অভদ্রের মতো এখানে আছেন কেন? চলে যান। ( লাবন্য)
ফাইয়াজ লাবন্যর দিকে তাকালো। লাবন্য ফাইয়াজের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলো ফাইয়াজের চোখ লাল হয়ে পানি টলটল করছে৷ লাবন্য ফাইয়াজের কলার ধরে বাইক থেকে নামিয়ে ফাইয়াজকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে
- তোমার কি আমাকে একটু ও বিশ্বাস নেই। সহজ সরল ছেলেটাকে নিয়ে আমাকে বলতে একটু ও বাধলো না মুখে। কিভাবে পারলে আমাকে এমন অপবাদ দিতে। ( লাবন্য)
ফাইয়াজ আর নিজেকে সামলাতে পারলো না। চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বললো
- আমি রাগের মাথায় বলে ফেলছি। তোমার ফোন বন্ধ । তুমি অনেক আগে পার্টি থেকে বের হয়েছো। কোনো খোজ নেই। চিন্তায় মাথা বিগ্রে গেছে। যখন দেখলাম তুমি গাড়ি তে করে নেমে কাব্যকে হাসিমুখে বাই দিচ্ছো তখন আর মাথা কাজ করে নি। কি বলতে কি বলে ফেলছি। ( ফাইয়াজ)
- আমার কাছে একটি বার জিঙ্গেস করতে পারতা। কাব্য না থাকলে আমাকে আর তোমার পাওয়া হতো না। ( লাবন্য)
ফাইয়াজ লাবন্যকে জড়িয়ে ধরে
- আমি তোমাকে হারাতে পারবো না। ( ফাইয়াজ)
লাবন্য এক এক করে ঘটনা ফাইয়াজকে বললো। ক্লাব থেকে বের হওয়ার পর কি ঘটেছে সবকিছুই বললো। ফাইয়াজ অবাক হয়ে গেলো। লাবন্যর ফোন অফ হয়ে গেছে লাবন্য র খেয়াল নেই। সবকিছু শোনার পর ফাইয়াজ বললো
- আমাকে তুমি মাফ করে দাও। আমার অনেক বড় ভূল হয়ে গেছে। ( ফাইয়াজ)
লাবন্য আর কিছু বললো না৷ কিছুক্ষণ জরিয়ে ছিলো দুজনে। লাবন্য ফাইয়াজকে ছেড়ে দিয়ে
- ভোর হয়ে আসছে৷ বাসায় চলে যাও৷ ( লাবন্য)
ফাইয়াজ লাবন্যর কপালে আলতো করে চুমু একে দিয়ে
- মাফ করে দিছো তো। ( ফাইয়াজ)
- হুম দিছি। এর পর থেকে না জেনে জানো কিছু বলা না হয়। ( লাবন্য)
- ঠিক আছে মনে থাকবে। ( ফাইয়াজ)
ফাইয়াজ লাবন্যর থেকে বিদায় নিয়ে বাইক নিয়ে চলে গেলো। লাবন্য ঘরে চলে গেলো।
**
সকাল ৯ টা
কাব্য রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এখনো কেউ আসছে না। কিছুক্ষণ পর লাবন্য আসলো। লাবন্য কাব্য দেখে
- আর কেউ আসে নি। ( লাবন্য)
- না ম্যাডাম। ( কাব্য)
লাবন্য ফোন বের করে ফাইজা কে কল দিলো। ফাইজা কল রিসিভ করে
- কাল সারারাত জেগে পার্টি করেছি। চোখে ঘুৃম। আমি আসতে পারবো না । আজকে আমাকে ছুটি দিয়ে দে । ( ফাইজা)
ফাইজা কথাটা বলে কলটা কেটে দিলো। লাবন্য অন্য স্টাফ দের কল দিলো। তারা ১ ঘন্টার সময় চাইলো। লাবন্য কল কেটে দিয়ে রেস্টুরেন্ট খুলে ভেতরে ঢুকলো। কাব্য রেস্টুরেন্টে ঢুকে সব কাজ কর্ম করতে লাগলো। লাবন্য কাব্যকে বললো
- কাব্য এটা তোমার কাজ না৷ তুমি কেন করছো? ( লাবন্য)
- ম্যাডাম সমস্যা নেই। সবার আসতে লেট হবে। আমি আগে করে রাখি। কাজ এগিয়ে যাবে। ( কাব্য)
লাবন্য আর কাব্যকে কিছু বললো না। কাব্য কাজ করতে লাগলো। লাবন্যর ফোন বেজে উঠলো। ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখলো আজমল চৌধুরী কল দিয়েছে। লাবন্য ফোন রিসিভ করতেই আজমল চৌধুরী বললো
- আজকে কোম্পানি তে ১ টার ভেতর খাবার পৌঁছে দিয়ো৷ ওখান থেকে কল করেছিলো। ( আজমল চৌধুরী)
- ঠিক আছে স্যার। সময় মতো পৌঁছে দিবো। ( লাবন্য)
- শোনো তোমাকে যে জন্য কল দিয়েছি। ( আজমল চৌধুরী)
- হ্যা স্যার বলুন। ( লাবন্য)
- আমি ৩ মাসের জন্য দেশের বাহিরে যাচ্ছি ব্যবসায়ের কাজে। তুমি তোমার ম্যাডাম কে দেখে রেখো। আর বাকী রেস্টুরেন্টে খোঁজ রেখো। ( আজমল চৌধুরী)
- স্যার আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আমি সব দেখে রাখবো৷ ( লাবন্য)
- চিন্তা মুক্ত হলাম। ( আজমল চৌধুরী)
আজমল চৌধুরী কলটা কেটে দিলো। লাবন্য ফোনটা রেখে চিন্তায় পড়ে গেলো। ১ টার ভেতর কিভাবে খাবার পৌঁছাবে । এখনো তো কেউ আসলো না। কাব্য লাবন্যর সামনে এসে
- ম্যাডাম এদিকের কাজ হয়ে গেছে। বাকীরা এসে কাজ শুরু করে দিলে হবে৷ ( কাব্য)
- তা তো বুঝতে পারছি। এদিকে যে চাপে পড়ে গেলাম। ( লাবন্য)
- কি চাপ ম্যাডাম? ( কাব্য)
- আরে বড় স্যার ফোন দিয়ে বললো ১ টার ভেতর খাবার পৌঁছে দিতে। ওরা কখন আসবে আর কখন কি করবে। কি করবো মাথায় কাজ করছে না। ( লাবন্য)
কাব্য অবাক হয়ে
- কেন ওনি না বললো অর্ডার ক্যানসেল করে দিবে৷ তাহলে। ( কাব্য)
- দেয়নি। খাবার আরো আগে দিতে বলছে। ( লাবন্য)
- টেনশন নিয়েন না সব সময়ের আগে হয়ে যাবে। ( কাব্য)
সব স্টাফ রা চলে আসলো। লাবন্য স্টাফ দের তাড়া দিলো। রেস্টুরেন্টের দরজা অফ করে ক্লোজ সিল টা ঝুলিয়ে দিলো। সেখানে লিখা ২ টার পর থেকে খোলা। সবাই মিলে ভেতর কাজ করতে লাগলো। বাহিরের কেউ এসে খাবার অর্ডার করে ঝামেলায় ফেলতে পারবে না। যা হবে সব দুপুরে দেখা যাবে।
সবাই মিলে কাজ করাতে রান্নার কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো। লাবন্য কাব্যকে দিয়ে খাবার পাঠিয়ে দিলো । কাব্য ১ টা ১৫ তে খাবার ক্যান্টিন রুমে পৌঁছে দিলো৷ খাবার বুঝিয়ে দেওয়ার পর কাব্য কোম্পানি থেকে বের হলো। তখনি কাব্যের সামনে একজন বৃদ্ধ লোক দাঁড়িয়ে
- বাবা তুমি কি এই কোম্পানি তে চাকরি করো। ( বৃদ্ধ লোক)
- না চাচা। আমি সামন্য ডেলিভারি বয় এখানে৷ খাবার দিতে আসছি৷ খাবার দিয়ে চলে যাচ্ছি। ( কাব্য)
- আমার একটা উপকার করতে পারবে। ( বৃদ্ধ লোকটা)
- হ্যা চাচা বলেন। ( কাব্য)
- হাত টা পাতো। ( বৃদ্ধ লোক টা)
কাব্য হাত পাততে বৃদ্ধ লোকটা ছোট্ট একটা কণা দিলো কাব্যের হাতে। কণা টা দিয়ে বললো
- এই বিল্ডিং এর ১০ তলায় ম্যানেজারের কাছে এই কণা টা দিয়ে আসবে। ( বৃদ্ধ লোকটা)
- আপনি যেয়ে দিয়ে আসলে পারেন তো। ( কাব্য)
- না বাবা। আমাকে ঢুকতে দিচ্ছে না৷ ম্যানেজারকে ফোনে পাচ্ছি। উপকার টুকু করো। ( বৃদ্ধ লোক)
- ঠিক আছে চাচা। ( কাব্য)
কাব্য কণা টা হাতে নিয়ে ভেতর প্রবেশ করলো। বৃদ্ধ লোকটা সোজা হয়ে দাড়িয়ে মাথার চাদর টা ফেলে দিয়ে বলতে লাগলো, এম ডি এবার তুই বাচবি কি করে? তোর সব শেষ করে দিবো। এই আদনান কে তুই চিনতে ভূল করেছিস। হাহাহাহা। তোর ম্যানেজার আমার হাতের মুঠোয়।
আদনান ফোন করে বললো, কাজ হয়ে গেছে। তোরা তোদের কাজ শুরু করে দে। শুধুমাত্র একটা ফোনের অপেক্ষা। তারপর এই কোম্পানি আমার এম ডি তুই রাস্তার ফকির। হাহাহাহাহা ।
**
কাব্য কনা টা নিয়ে ১০ তলায় উঠে ম্যানেজার কে খুজে ম্যানেজারের কাছে দিলো। ম্যানেজার কাব্যকে জিঙ্গেস করলো, কেউ দেখে নি তো। কাব্য না বললো। ম্যানেজার কাব্যকে চলে যেতে বললো। কাব্য বের হয়ে চলে যেতে যাবে তখন পিছন থেকে সেই মেয়েটি ডাক দিয়ে
- আমি আফরিন। গতকালকের জন্য তোমাকে ধন্যনাদ। তোমার নাম কি? ( আফরিন)
- জ্বি কাব্য। ( কাব্য)
আফরিন কাব্যের সাথে কথা বলা শুরু করে দিলো। কাব্য আফরিনের বক বক শুনতে লাগলো। কাব্য আফরিন কে থামিয়ে বললো,
- আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। পরে আবার আসবো। ( কাব্য)
কাব্য কথাটা বলে চলে গেলো। কাব্য কোম্পানির গেইট দিয়ে বের হয়ে বৃদ্ধ লোকটাকে খুঁজলো । পেলো না৷ না পেয়ে চলে গেলো কাব্য। আদনান কাব্যের চলে যাওয়ার পর। আদনান ম্যানেজারকে কল করলো। ম্যানেজার ওকে বলে কলটা কেটে দিলো। আদনান ফোন দিলো। ওপাশ থেকে বললো, বস কাজ শুরু হয়ে গেছে কানেক্ট হয়ে গেছে। আদনান কথাটা শোনা মাত্র খুশি হয়ে গেলো। আসছি বলে কলটা কেটে দিলো।
এদিকে কোম্পানির সব কম্পিউটার স্টাফ দের হাতের বাহিরে কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে। কারো বুঝতে বাকী রইলো না সব কন্ট্রোল হ্যাকারদের হাতে চলে গেছে। ম্যানেজার এসে চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিয়েছে। আফরিন চুপচাপ বসে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে আছে এম ডির পি এইচ এসে সবাইকে কিছু করতে বললো৷ হ্যাকারদের হাত থেকে সবকিছু ফিরিয়ে আনতে বললো। না হলে এম ডি কে কি জবাব দিবে। ম্যানেজার ও চিল্লাপাল্লা করছে। মনে মন অন্যকিছু ভাবছে। আফরিন উঠে দাঁড়িয়ে
- স্যার সব কিছু আমাদের হাতের বাহিরে চলে গেছে। আমাদের বসে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। চিল্লাপাল্লা করলে কোনো কিছু হবে না। সবাই মাথা ঠান্ডা করে বসে ভাবুন কি করা যায়? নিশ্চয়ই কোনো বুদ্ধি বের হবে। ( আফিরন)
আফরিনের কথায় সবাই চুপ হয়ে বসে ভাবতে লাগলো। ম্যানেজার তার মতো করে বকে যাচ্ছে। সবাই কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে রইলো। পি এইচ হতাশ হয়ে গেলো। কি জবাব দিবে এখন স্যার কে।
আদনান পৌঁছে গেলো নিজের গোপন কক্ষে। গোপন কক্ষে ঢুকতে দেখলো ৯৯% হয়ে গেছে। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো। আদনানের খুশি দেখে কে? আর মাত্র ১০ সেকেন্ড বাকি ১০০% হতে। সবাই ১০ সেকেন্ড থেকে গোনা শুরু করলো। ১০, ৯
এদিকে ম্যানেজার বলতে লাগলো, শেষ হয়ে গেলো সব সব শেষ হয়ে গেলো। কোম্পানি শেষ হয়ে গেলো।
এদিকে
আদনান যখন ১ বলতে যাবে তখনি বিকট শব্দে মনিটর গুলো ব্লাস্ট হয়ে গেলো। আদনান থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো
আফরিন উঠে দাঁড়িয়ে বললো, ফিরে এসেছে আমাদের টা আমাদের কাছে। আফরিনের কথা শুনে সবাই কম্পিউটারের দিকে তাকালো। আগের মতেই স্বাভাবিক রয়েছে। সবার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। ম্যানেজার হা হয়ে গেলো। পি এইচ জেনো জীবন ফিরে পেলো৷ দীর্ঘ শ্বাস ফেললো জোরে।
আদনান বলতে লাগলো, এটা হতে পারে না৷ কিছুতেই হতে পারে না৷ আমি সব শেষ করে ফেলবো।
আদনান পাগলের মতো করতে লাগলো আর সবকিছু ফেলে ভাঙতে শুরু করলো। একজন বললো, বস শেষের দিকে আমাদের ডিভাইস ওর লোড নিতে পারে নি যার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ওদের পাওয়ার টা স্টং বেশি ছিলো।
আদনান বলে উঠলো, আমি কোনো কিছু শুনতে চায় না। লোড নেওয়ার জন্য যা প্রয়োজন তাই নিয়ে এসো। আমি আর ব্যর্থ হতে চাই না। আমার এম ডি কোম্পানি চাই মানে চাই। ওটা একবার হাতের মুঠোয় পেয়ে গেলে আমি হবো বিশ্বের সেরা।
দুপুর ৩ টা
কাব্য কাস্টমারদের থেকে মেনু কার্ড দিয়ে অর্ডার নিচ্ছে। হঠাৎ করে কাব্যের চোখ যেয়ে পড়লো দরজার দিকে। দরজা দিয়ে এম ডি ভেতরে ঢুকলো। লাবন্য এম ডি কে দেখে ক্যাশ কাউন্টার থেকে উঠে এম ডির সামনে যেয়ে হাসি মুখে
- স্যার আপনি এই সময়। ( লাবন্য)
- হ্যা। তোমাদের সাথে কিছু জরুরী কথা ছিলো। ( এম ডি)
- আসুন স্যার বসুন। ( লাবন্য)
কাব্য কিচেনে চলে গেলো। এম ডি স্যার চেয়ারে বসলো। লাবন্য নিজে যেয়ে ঠান্ডা জুসের গ্লাস এনে এম ডি র সামনে রাখলো। এম ডি লাবন্যকে বললো
- তোমাদের যত দেখি ততোই অবাক হই। তোমরা মানুষদের আপ্যায়ন করে তাদের মনের ভেতর সহজে জায়গা করে নাও। এই সব গুন আবার সবার থাকে না৷ ( এম ডি)
এম ডির কথা শুনে লাবন্য লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিচু করে নিলো। এম ডি জুসের গ্লাস নিয়ে জুস খেলো। এম ডি লাবন্য কে বললো
- কাব্য কে ডেকে নিয়ে এসো। ( এম ডি)
লাবন্য কিচেনে যেয়ে কাব্যকে বললো,
- এম ডি স্যার ডাকছে। ( লাবন্য)
- খাবার হয়ে গেছে নিয়ে আসছি। আপনি যান। ( কাব্য)
- আমি নিয়ে যাবানি। তুমি যাও। নাহলে রাগ করবে নে ( লাবন্য)
- নাহ্ আমি অর্ডার নিয়েছি আমি দিবো । ২ মিনিট। ( কাব্য)
লাবন্য আর কিছু না বলে চলে এসে এম ডি কে বললো, আসতাছে।
এম ডি বসে রইলো। কাব্য খাবার নিয়ে কাস্টমার দের দিয়ে এম ডির সামনে দাঁড়িয়ে
- সরি স্যার। ক্যাস্টমার ছিলো তাই একটু লেট করে ফেললাম। ( কাব্য)
এম ডি মুচকি হেসে উঠে দাঁড়িয়ে কাব্যের কাঁধে হাত দিয়ে
- তুমি গ্রাম থেকে আসলে ও তোমার ভেতর প্রতিভা আছে। আমার মতো মানুষের সাথে দেখা করার জন্য সিরিয়াল দিয়ে থাকে মানুষ। আর তুমি আমাকে ওয়েট করালে। সত্যিই তোমার প্রতিভাকে আমি সেলুট জানাই। ( এম ডি)
লাবন্য কাব্যের দিকে তাকিয়ে কাব্য কে চোখ গরম দিলো। কাব্য মাথা নিচু করে
- সরি স্যার। ( কাব্য)
- তোমাকে যেটা বলতে আসছি। ( এম ডি)
- হ্যা বলেন। ( কাব্য)
- তোমাকে আমার কোম্পানি তে নিয়ে যেতে চাই। ওখানে তুমি চাকরি করবে। ভালো মাইনে পাবে। ( এম ডি)
- সরি স্যার আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি আমার রেস্টুরেন্ট ফেলে কোথা ও যেতে পারবো না। ( কাব্য)
- ভেবে দেখো। এই অফার কিন্তু সবাই পায় না। ( এম ডি)
- আমি এখানেই ঠিক আছি । আমি যেখানে প্রথম এসেছি সেখানে থেকে অন্য কোথা ও যাবো না। আর আপনার কোম্পানি তে চাকরি করার আমার কোনো যোগ্যতা নেই। ( কাব্য)
কাব্যের এমন উত্তর শুনে লাবন্য অবাক হয়ে গেলো। এম ডি কাব্যের কথা শুনে হাসলো। লাবন্য মনে মনে ভাবছে, এমন সুনাম ধন্য মানুষের মুখে না করলো কিভাবে। এখানে থেকে অত্যাচারের স্বীকার হচ্ছে তাও রাজি হলো না। সে তো চাইলে কাব্যর যেকোনো ক্ষতি করতে পারে।
লাবন্য ভাবতে লাগলো। তখন এম ডি বললো
- আমার খিদে পেয়েছে। আমার সাথে লাঞ্চ করতে অসুবিধা নেই দুজনের নিশ্চয়ই । ( এম ডি)
কাব্য কিছু বলতে যাবে তখন লাবন্য কাব্য কে থামিয়ে দিয়ে
- না না। করা যায়। ( লাবন্য)
এম ডির সাথে বসে কাব্য আর লাবন্য খেতে বসলো।
রাত ২ টা
ম্যানেজার ছাদের এক বারে কার্নিশে এসে দাঁড়ালো । হঠাৎ করে ম্যানেজার নিচে পড়ে গেলো.............
চলবে
Ek villian
Part 9
Writer
Meherab Kabbo