এক ভিলিয়ান পর্ব ৭

রুস্তুম সরদার ক্লাব থেকে ফূর্তি করে বাসার দিকে ফিরতেছিলো রাত ৪ টার সময়।  গাড়ি আপন গতিতে চলতে লাগলো।  রাস্তা পুরো শুনশান৷ ল্যাম্প পোস্টের আলো আঁচড়ে পড়েছে রাস্তায়।  গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ করে গাড়ি ব্রেক করলো।  ড্রাইভার। রুস্তুম সহ সবাই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়লো।  পিছনের গাড়ি সামনের গাড়িতে ডাক্কা মারলো।  হঠাৎ করে ব্রেক কেউ বুঝতে পারলো না।  রুস্তুম সরদার ড্রাইভার কে গালি করলো।  ড্রাইভারের কথায় সবাই সামনের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো। লাম্প পোস্টের আলোয় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে রাস্তার মাঝখানে আগন্তুক একজন দাঁড়িয়ে আছে।  রুস্তুম সরদার রেগে যেয়ে  গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো ।  পিছনে রুস্তুমের লোক এসে জড়ো হলো৷ রুস্তুম বললো

- দেখ তো কে?  রুস্তুম সরদারের পথের মাঝখানে দাঁড়ায়। ওর এতো বড়ো সাহস।  শেষ করে দে ওকে৷  ( রুস্তুম) 

রুস্তুমের কথায় সবাই সামনের দিকে যেতে লাগলো হাতে  হকি দা এসব নিয়ে।  রুস্তম সরদার বললো
- বুঝিয়ে দে ওকে রুস্তুম সরদারের পথ আটকিয়ে দাড়ালে তার কি হাল হয়?  ( রুস্তম সরদার) 

রুস্তুম সরদারের কথা শেষ হতে না হতে সামনে এগিয়ে যাওয়া লোকগুলোর বুক গুলিতে ঝাঝড়া হতে লাগলো।  রুস্তুম সরদার এমন দৃশ্য দেখে হতবাক।  এমন পরিস্থিতি তে আগে কখনো পড়ে নি।  রুস্তুম সরদারের লোকজন রাস্তার উপর লুটিয়ে পড়লো।  রুস্তুম সরদার ভয় পেয়ে গাড়িতে উঠে বসে ড্রাইভার কে গাড়ি চালাতে বললো।  ড্রাইভার বললো, স্যার গাড়ির চাকা পানসার হয়ে গেছে চলছে না। 

ড্রাইভারের কথা শুনে রুস্তুম গাড়ি থেকে নেমে চাকার দিকে তাকিয়ে দেখলো সব চাকা বসে গেছে।  রুস্তুম পিস্তল বের করে আগন্তুক লোকটার দিকে এগিয়ে যেয়ে
- কে তুই?  তোর সাথে আমার শত্রুতা কিসের৷  আমার পথ আটকে রাখছিস কেন?  বাচতে চাইলে চলে যা।  রুস্তুম সরদারকে চিনিস না৷ ( রুস্তম)

আগন্তুক লোকটা জোরে হেসে উঠলো ।  হেসে উঠে
- তুই  যেই হোস না কেন?  আমার হাত থেকে তুই বাঁচতে পারবি না।  তোর পাপের ঝোলা পরিপূর্ণ করে ফেলছিস।  এখন  একটু শাস্তি উপভোগ  করবি।  ( আগন্তুক লোকটা) 

রুস্তুম সরদার পিস্তলের টিগ্যার চাপ দিবে ভয়তে তখনি হাত থেকে পিস্তল ছিটকে পড়ে গেলো।  কিছুটা পিছনে সরে গেলো।  পুরো ভয় পেয়ে গেলো।  রুস্তুম সরদার বললো
- কে তুই?  আমার সাথে তের শত্রুতা কি?  ( রুস্তুম সরদার) 
- আমি ডার্ক ডেবিল। আমার সাথে তোর শত্রুতা নেই তবে,   তোর সাথে  এই শহরের প্রতিটা মানুষের সাথে তোর শত্রুতা রয়েছে।  অনেক নিরীহ মানুষদের  অত্যাচার করেছিস লাগাম ছাড়।  তোর এই পাপের শাস্তির জন্য প্রস্তুত হ। 
- তুই যা চাইবি তাই দিবো।  আমাকে যেতে দে।  অর্থ সম্পদ প্রভাব নাম যা আছে সব তোর নামে করে দিবো৷ আমাকে মারিস না। তোকে এই শহরের বড় মাস্তান করে দিবো।  ( রুস্তুম) 
-তোকে মারলে আমার নাম ফুটে উঠবে।  তোদের মতো আগাছা পরিষ্কার করতে পারলে সবার নজর এই ডার্ক ডেবিলের দিকে থাকবে। সকাল হতে না হতে ডার্ক ডেবিল নাম ছড়িয়ে পড়বে।  হাহাহাহাহা।  ( ডার্ক ডেবিল) 

ডার্ক ডেবিল উপরের দিকে পিস্তল ধরে  ফায়ার করলো ফাকা আজাশে।  রুস্তম সরদার ঘাবড়ে যেয়ে ভয়তে বাঁচার জন্য ডার্ক ডেবিলের পা জরিয়ে ধরে অনুনয় করতে লাগলো।  ডার্ক ডেবিল হেসে দিয়ে বললো
- এরকম অনেক মানুষ তোর পায়ে পড়ে বাঁচতে চেয়েছিলো কিন্তু তোর মতো নরপিশাচ ওদের কথা শুনিস নাই।মেরে ফেলছিস।  আজ তোর কোনো রক্ষা নেই।  ( ডার্ক ডেবিল) 

ডার্ক ডেবিল পা ছিটকে মারলো। রুস্তুম সরদার পিছনে পড়ে গেলো।  রুস্তম সরদারের বুকে পা দিয়ে
- তোর মতো পিশাচ কে বাঁচিয়ে রাখলে শহরে আর্বজনা বাড়বে।  তুই থাকবি না শহরে আবর্জনা হবে না।  ( ডার্কি ডেবিল)

রুস্তুম সরদার কিছু বলতে যাবে তখন ডার্ক ডেবিল  রুস্তম সরদারের হাত ধরে মোচড় দিলো।  রুস্তুম সরদায় ককিয়ে উঠলো।  হাতের ডানা জেনো দু ভাগ হয়ে গেলো।  রুস্তুমের মুখের উপর পা দিয়ে চাপ দিয়ে দু হাতের বাহু ছিঁড়ে ফেললো।  রুস্তুম সরদার কোনো আত্ম নাদের চিৎকার বের হলো না।  একহাতের দু আঙ্গুল দিয়ে  চোখের মধ্য দিয়ে চোখ তুলে ফেললো।  আর বললো
- এই চোখ দিয়ে অনেকের দিকে খারাপ নজর দিছিস।  অনেকের সর্বনাশ করেছিস।  তোকে যন্ত্রণা দিয়ে মারবো।  ( ডার্ক ডেবিল) 

রুস্তুমের মুখ দিয়ে কোনো শব্দই বের হচ্ছে না।  চাপা শব্দ শোনা যাচ্ছে।  ডার্ক ডেবিল মুখের উপর দিয়ে পা সরিয়ে নিলো।  রুস্তম জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো।  সাথে সাথে ডার্ক ডেবিল রুস্তমের মুখের ভেতর পিস্তল ঢুকিয়ে দিয়ে গুলি করলো। সাথে সাথে রুস্তম সরদার নিস্তেজ হয়ে গেলো।  লাশ রেখে ডার্ক ডেবিল চলে গেলো। 

প্রশানের লোকজন খবর পেয়ে গাড়ি আর গাড়ি হয়ে গেলো।  গাড়ির শব্দে রাস্তার পাশে সবার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।  মিরান উঠে দেখলো পুলিশের গাড়ি ভুমভুম করে শব্দ করে ছুটছে।  মিরান কাব্যকে ঘুমাতে দেখে অবাক হয়ে কাব্যকে ডাকলো।  কাব্য ঘুম  থেকে উঠে চোখ ডলতে ডলতে
- কি হয়েছে?  ভোর হয়ে গেছে।  ( কাব্য) 
- পুলিশের গাড়ি গেলো অনেক গুলো। গাড়ির সাইরেন্ট এ সবাই ঘুম থেকে উঠে বসলাম তুই শান্তি তে ঘুমাচ্ছিস।  অন্য দিন তো পায়ের শব্দে তের ঘুম ভেঙ্গে যায়।  ( মিরান) 
- কই কই পুলিশের গাড়ি৷   ( কাব্য) 
- নিশ্চয়ই  বড় কোনো ঝামেলা ঘটেছে৷  না হলে এভাবে তো পুলিশের গাড়ি যেতো না । ( মিরান) 

কাব্য অবাক হয়ে গেলো মিরানের কথা শুনে৷ 

পুলিশের গাড়ি ঘটনা স্থলে পৌঁছে গেলো।  পুলিশের অফিসার টেকো মুরাদ গাড়ি থেকে নেমে রুস্তুম সরদারের লাশ দেখে অবাক হয়ে গেলো।  দু হাত ছিড়া চোখ উপড়ানো৷  এভাবে কে মারলো।  টেকো মুরাদ চিন্তায় পড়ে গেলো। এখানে ওর শত্রু কে হতে পারে।  টেকো মুরাদ তার বড় অফিসার কে কল দিয়ে রুস্তুম মার্ডার হয়েছে জানিয়ে দিলো।  মিডিয়ার লোকজন ও চলে এসেছে।  নিউজ করতে লাগলো।  মুরাদ তার সোর্স দের  বললো,  লাশ গুলো মর্গে পাঠানোর জন্য।  সোর্সরা ট্রেচার করে লাশগুলো গাড়িতে উঠাতে লাগলো।  মুরাদ হেঁটে হেটে ভালো করে জায়গা টা দেখছে।  কোনো ডকুমেন্ট পাওয়া যায় কি না?  নাহ্ কোনো ডকুমেন্ট নেই এখানে যে আসামি ধরবে।  গাড়িতে লাশ উঠানোর পর মুরাদ  গাড়ির কাছে যেতে মিডিয়ার লোক ঘিরে ধরলো।  মিডিয়ার লোক জিঙ্গেস করছে,  স্যার রুস্তুম সরদার কে বা কারা মারলো।  কোনো ডকুমেন্ট পেয়েছেন। 
এক ভিলিয়ান পর্ব ৭  



মিডিয়ার প্রশ্ন শুনে মুরাদ বিরক্তি নিয়ে
- রুস্তম সরদার নিশ্চয়ই ভালো লোক ছিলো না।  সবাই তাকে চিনে।  তার মৃত্যুর পিছনে তার কোনো শত্রুর হাত রয়েছে।  তবে যেই এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের কে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। ( মুরাদ) 

মুরাদ মিডিয়ার লোকদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চলে গেলো।  নিউজ পেপারস্ ছাপানোর ভেতর রুস্তুম সরদার মার্ডার এর খবর পেয়ে প্রথম পৃষ্ঠায় রুস্তুম সরদারের মার্ডার এর খবর ছাপা করলো। 

এক এক করে পুলিশের গাড়ি মিডিয়ার গাড়ি এ্যাম্ভুলেন্স চলে যাচ্ছে।   একজন দৌড়াচ্ছে রাস্তা দিয়ে মিরান তাকে জিঙ্গেস করলো,  কি হয়েছে?  লোকটা বললো,  রুস্তুম সরদার খু*ন হয়েছে।  রুস্তুম সরদার খু*ন হয়েছে।  কথাটা বলতে বলতে লোকটা চলে গেলো।  মিরান কাব্য অবাক হয়ে গেলো।  মিরান বললো
- এই শহরে রুস্তুম সরদাকে খেয়ে দেওয়ার মতো কার বুকে এতো সাহস জন্মালো।  ( মিরান) 
- লোকটাকে তো দেখতে ভয়ংকর লাগতো। ( কাব্য) 
- তুই দেখেছিস।  ( মিরান) 
- হ্যা গতকাল রেস্টুরেন্টে কতগুলো লোক নিয়ে আসছিলো।  পরে বন্দুক বের করে ম্যাডামকে শাসিয়ে গেলো টাকার জন্য।  ম্যাডাম তো সেই ভয় পেয়েছিলো।  আমাকে এভাবে শাসালে তো আমার প্যান্ট ভিজে যেতো। ( কাব্য)

কাব্যের কথায় মিরান হেসে দিলো।  মিরান বললো
- যাক ভালোই হয়েছে।  এরিয়ার মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে৷  ( মিরান) 

মিরান জোরে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। 

**
সকাল ৮ টা বাজতেই নিউজ পেপারস্ হাতে নিয়ে এক এক জন এক জায়গায় হাঁটছে আর বলছে,  আজকের গরম খবর ক্লাব থেকে ফেরার পথে রাস্তায় রুস্তুম সরদার সহ তার লোকজন খু*ন হয়েছে।  আজকের তাজা খবর। 

রুস্তুম সরদার খু*ন হয়েছে এটা শুনে সবাই নিউজ পেপারস্ কিনতে লাগলো।  কোথা ও একজন জোরে জোরে খবর পড়ছে ১০ জন গোল করে দাড়িয়ে  শুনছে। 


আজমল চৌধুরী চায়ের কাপ হাতে নিয়ে পেপারস্ হাতে নিতে প্রথম পৃষ্ঠায় রুস্তুম সরদার খু*ন হয়েছে খবর টা দেখে চোখ বড় বড় করে ফেললো।  চায়ের কাপ পাশে রেখে খবর পড়তে লাগলো,  ক্লাব থেকে রাতে ফেরার পথে রুস্তুম সরদার খু*ন হয়েছে।  পুলিশ এখনো জানতে পারিনি খু*নি কে?  কি তার পরিচয়? 

আজমল চৌধুরী পেপারস্ টা রেখে টিভি ছাড়লো।   টিভিতে শুধু নিউজ চলছে।  রুস্তুম সরদার মার্ডার হয়েছে।  খুনি লাপাত্তা।  পুলিশ কি পারবে খুনিকে বের করতে। 


রুস্তম সরদার মার্ডার হওয়ার খবর পেয়ে জনসাধারণ অনেক খুশি।  চাঁদা বাজ মার্ডার হয়েছে ভালো হয়েছে।  ওর জন্য কেউ শান্তিতে থাকতে পারতো না।  অনেক অত্যাচার করেছে সবাইকে।  এক এক জন এক এক ধরনের মন্তব্য করতে লাগলো।।

**
আজমল চৌধুরী  চিল্লিয়ে তামান্নাকে ডাকতে লাগলো।  আজমল চৌধুরী র চিল্লানো শুনে তামান্না বিরক্ত হয়ে নিচে নেমে
- কি হয়েছে?  সাতসকালে এতো ডাকছো কেনো?  ( তামান্না) 
- আরে টিভির নিউজ দেখ। ( আজমল চৌধুরী) 

তামান্না টিভির দিকে চোখ দিতে দেখলো রুস্তুম সরদার মার্ডার হয়েছে এটা দেখে তামান্না হুর রে বলে লাফিয়ে উঠলো।  তামান্না বললো
- একদম ঠিক কাজ হয়েছে।  ও না মরলে ওকে আমি নিজে মারতাম। আমার সাথে টক্কর নিতে আসে।  ( তামান্না) 
- মামনি এখন এসব বলার সময় না। এসব কেউ শুনলে ঝামেলা হবে৷  এমনি তে হয়তো সবাই নজর দাড়িয়ে রেখেছে রুস্তম সরদার কে  মার্ডার করা ব্যক্তি টাকে খুজছে।  ( আজমল চৌধুরী) 
- ড্যাডি তুমি এতো ভাবছো কেন?  হারমি টা মরার উপলক্ষ্যে আজকে একটা পার্টি দিবো।  ( তামান্না) 
- কি বলছিস?  ( আজমল চৌধুরী) 
- তুমি না করো না ড্যাডি।  আমার অনেক খুশি লাগছে।  ( তামান্না) 

তামান্না খুশিতে চলে গেলো। 

এদিকে সবাই মিষ্টি কিনে মিষ্টি বিলি করছে চাঁদা বাজ রুস্তম সরদার মার্ডার হওয়ার খবরে।  সবার ভেতর আনন্দ ফুটে উঠেছে।।

**
সকাল ১০ টা

টেকো মুরাদ থাবায় বসে ফাইল দেখতেছিলো।  তখনি ফোনটা বেজে উঠলো ।  ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখলো ডাক্তার আশিক  কল দিয়েছে । মুরাদ কল রিসিভ করেই
- ডাক্তার কোনো ক্র পেলে।  কে মেরেছে?  ( মুরাদ)
- নাহ্ তবে রুস্তুমের বুকের উপর ডার্ক ডেবিল  লাগানো একটা স্টিকার পেয়েছি। ( আশিক) 

আশিকের কথা শুনে মুরাদ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো।  মুরাদ অবাক হয়ে বললো
- ডার্ক ডেবিল।  এই নামটা তো আগে কখনো শুনিনি।  ( মুরাদ)
- আমার যতদূর ধারনা খু*নি এই নামটা ব্যবহার করছে৷  ( আশিক) 
- ঠিক আছে ডাক্তার।  রাখছি। ( মুরাদ) 

মুরাদ কল টা কেটে দিলো।  ডার্ক ডেবিল কে হতে পারে।  মুরাদ সাথে সাথে বড় অফিসারকে ফোন দিয়ে ডার্ক ডেবিলের কথা বললো।  বড় অফিসার এই প্রথম নামটা শুনলো।  চিনে না।  আগে কখনো নাম শুনে নি। 

মুরাদ ছোট বড় আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে শুরু করে উপর মহল পর্যন্ত ডার্ক ডেবিল নামটা চলে গেলো।  ডার্ক ডেবিল নামটা এই প্রথম শুনতে পেলো সবাই
সবাই খোঁজ নিতে লাগলো।  এই নামে কাউকেই চিনে না।  সবার ভেতর চিন্তা দেখা দিয়েছে,  কে এই ডার্ক ডেবিল।

**
তামান্না রেস্টুরেন্টে এসে দেখলো সবাই কাজ করছে৷  আগের দিনের তুলনায় আজ কাস্টমার কম তা ও সবাই কাজে ব্যস্ত।  তামান্না লাবন্যকে বললো
- কাস্টমার নেই।  এতো রান্না করছো কেন?  ( তামান্না) 
- ম্যাডাম কোম্পানির অর্ডার রয়েছে তাদের জন্য খাবার তৈরি করছি।  সময় মতো পৌছাতে হবে।  ( লাবন্য) 
- ওহ্।  আমি তো ভূলেই গেছিলাম ।। শোনো যেটা বলতে আসছি। ( তামান্না) 
- কি ম্যাডাম?  ( লাবন্য)
- আজ ৮ টার ভেতর সবকাজ শেষ করে রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে এই ক্লাবে চলে আসবে সবাই। ( তামান্না) 

লাবন্য অবাক হয়ে
- ক্লাবে  সবাই যাবো। ( লাবন্য) 
- হ্যা।  আজ সবাইকে নিয়ে পার্টি হবে।  ( তামান্না) 
- কোনো উপলক্ষ্যে।  ( লাবন্য) 
- হ্যা।  রুস্তুম সরদার মার্ডার হয়ে সেই উপলক্ষ্যে।  সময় মতো চলে এসো সবাই।  ( তামান্বা) 

তামান্না কথাটা বলে চলে গেলো হাসিমুখে।  লাবন্য নিজের কাজে মন দিলো। 

দুপুর ১ টা

রুস্তুম সরদারের লা*শ দেখার জন্য ছোট মহল থেকে শুরু করে বড় মহলের সবাই দেখতে  আসছে।  রুস্তম সরদার কে দেখা শেষ করে সবাই ডার্ক ডেবিলকে খুজে বের করার বলছে।  ডার্ক ডেবিলকে সবাই দেখতে চায়।  রুস্তুমের দাফন কাফন শেষে সবাই চলে গেলো।  শহরে পুলিশে দিন থেকে কড়াকড়ি ভাবে রেট দিতে আছে।   ভয়তে কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। 

দুপুর ২ টা

কাব্য খাবার নিয়ে বড় একটা কোম্পানির ভেতর ঢুকলো।  কতো কড়া সিকিউরিটি।  সব জায়গায় চেক করছে।  একজন কাব্যকে একটা দিলো।  গলায় ঝুলিয়ে নেওয়ার জন্য।  খাবার গুলো সব ক্যান্টিনে পৌছে দিলো।  একজন এসে কাব্যকে বললো এম ডি স্যার ডাকছে।  কাব্য লোকটার সাথে যেতে লাগলো।  অফিসের ভেতর সব কম্পিউটার আর কম্পিউটার।  সবাই কম্পিউটার এ কাজ করতে ব্যস্ত।  কেউ কাউকে দেখার মতো সময় নেই।  লোকটা কাব্যকে নিয়ে  এম ডি র রুমে নিয়ে গেলো।  কাব্য রুমে ঢুকে এম ডি কে দেখে অবাক হয়ে গেলো ।  ইনি তো সেই রাতের লোকটা যাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলো।  এম ডি কাব্যকে বসতে বললো।  কাব্য চেয়ারে বসলো।  কাব্য মনে মনে ভাবছে জিঙ্গেস করবে কি না সেদিনের রাতের কথা।  নাকি জিঙ্গেস করবে না।  যদি অন্যকিছু ভাবে ।  না থাক কিছু জিঙ্গেস করবো না। 
এমডি কাব্যের দিকে কিছু টাকা দিয়ে
- এটা তোমার বকশিস । ( এমডি) 
- দুঃখিত স্যার আমি বকশিস নিতে পারবো না। ( কাব্য) 
- কেন কম হয়ে গেছে বকশিস। ( এম ডি) 
- না কম না।  আমি কাজ করি তার জন্য আমাকে বেতন দেওয়া হয়।  আমি কেন বকশিস নিবো?  ( কাব্য) 
- আমি তোমাকে খুশি হয়ে দিচ্ছি। ( এম ডি) 
- আমি ঘুস খায় না।  মাফ করবেন।  আপনার যদি অন্যকিছু বলার থাকে বলুন।  আমাকে আবার সময় মতো পৌছাতে হবে।  ( কাব্য) 

কাব্যের কথায় এম ডি রাগান্বিত হয়ে
- আমি তোমাকে ঘুস দিচ্ছি এটা বলতে চাচ্ছো। ( এম ডি) 
- এটা আমি নিলে ঘুস নেওয়া হবে৷  এটা ঘুস ছাড়া কিছু না৷ আমি তো আপনার কাজ করি না তাহলে আমি কেন টাকা নিবো।  ( কাব্য) 
- তুমি কি জানো ?  তোমার এই ব্যবহারের জন্য তোমার রেস্টুরেন্টের অর্ডার ক্যানসেল করে দিবো। ( এম ডি) 
- সে আপনি যা ইচ্ছা করেন।  আমার পক্ষে আপনার থেকে টাকা গ্রহন করা সম্ভব না। ( কাব্য) 

কাব্য উঠে হাটা দিলো।  এম ডি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷ এম ডি তার পি এইচ এর দিকে তাকালো।  পিএইচ বললো
- স্যার আপনাকে এভাবে অপমান করা বরদাস্ত করা যাবে না৷  আপনি একবার বলেন ঐ ছেলেকে আপনার পায়ের কাছে এনে ফেলবো। ( পিএইচ) 

এম ডি পিএইচ এর দিকে তাকিয়ে
- কেন ছেলেটা টাকা নিলে ভালো হতো বুঝি।  ( এম ডি) 

পি এইচ  আর কিছু বলতে পারলো না৷ মাথা নিচু করে নিলো। 


কাব্য হেটে যাচ্ছে আর দেখছে সবাই কম্পিউটারে কাজ করছে।  হঠাৎ করে কয়েকজন একজনের কাছে চলে গেলো।  কাব্য দাঁড়িয়ে পড়লো।  ভেতরে হট্টগোলের মতো  হয়ে গেলো কয়েক সেকেন্ডে।  একটা কম্পিউটারে এক এক জন এক এক ভাবে কি জেনো করছে।  কাব্য কৌতুহল নিয়ে ভেতর ঢুকলো।  ভেতরে ঢুকতে কাব্য শুনতে পেলো  কেউ কেউ বলছে, আজকে মনে হয় সবাইকে এক সাথে চাকরি হারাতে হবে।   মনে হয় অন্য কেউ হ্যাক করে নিয়েছে ডিভাইস টা।  ডিভাইস ফেরত না আনা গেলে এম ডি স্যার আর কাউকেই রাখবে না চাকরি তে৷ 

সবার কপালে চিন্তায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করলো।  কাব্য বললো
- কি হয়েছে এখানে?  ( কাব্য) 

কাব্যর কথা শুনে সবাই পিছনে ফিরলো।  কাব্যকে দেখে একজন বললো,  তোর মতো ফকিন্নি এই অফিসে ঢোকার সুযোগ পেলো কি করে?  তোকে কে ঢুকতে দিছে। 
কাব্য দাঁত কেলিয়ে হেসে দিয়ে
- আমি খাবার ডেলিভারি করতে আসছি।  যেতে পথে দেখলাম আপনাদের হট্টগোল তাই জানতে চাইলাম।  ( কাব্য) 
একটা মেয়ে রেগে, তুই জেনে কি করবি।  দেখে তো মনে হয় পড়াশোনা করেছিস।  তুই কম্পিউটারের কি বুঝবি।  সময় নষ্ট করিস না যা সামনে থেকে।  তোর ড্রেস দেখলে বমি লাগছে আমাদের।

কাব্য মেয়েটার কথা শুনে মাথা নিচু করে নিলো।  সবাই হাল ছেড়ে দিয়ে যে যার জায়গায় যেয়ে বসলো। কাব্য খেয়াল করলো সামনে বসা মেয়েটার চোখে পানি ছল ছল করছে।   সবাই মিলে মেয়েটাকে বকতে লাগলো  কাব্য মেয়েটার পাশে যেয়ে আস্তে আস্তে
- ম্যাম আমাকে একটি বার দেখতে দিবেন৷  সমস্যা টা কি?  ( কাব্য) 

মেয়েটা উঠে দাঁড়িয়ে, এ দেখে আর কোনো লাভ নেই।  সব শেষ। 

হতাশা নিয়ে সরে গেলো।  কাব্য চেয়ারে বসে মাউস ধরে সব কিছু দেখতে লাগলো৷ মেয়েটাকে বকতে লাগলো সবাই।  সাথে কাব্যকে ও।  কেউ কেউ তো বলতে লাগলো, আমরা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আমরা পারলাম না ঠিক করতে।  আর আসছে ডেলিভারি বয় ঠিক করতে।  কাব্যকে অনেক কিছু বলে ছোট করতে লাগলো।   তখনি এম ডি স্যার ভেতরে ঢুকতে সবাই অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো..........

চলবে

Ek villian

Part 7 

Writer
Meherab Kabbo     
Previous Post Next Post