- বন্ধু কাকে বলিস। ছোট লোকের জাত তুই আমাদের বন্ধু হওয়ার কি যোগ্যতা আছে। ভাই বলে ডাক। ( রাজ)
রাজ কথাটা বলে কাব্যের গালে ঠাস ঠাস করে কয়েকটা চড় বসিয়ে দিলো। কাব্য গালে হাত দিয়ে রাজের দিকে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো। আশপাশের সবাই তাকিয়ে পড়লো। আকিব কাব্যকে ডাক্কা মেরে
- এই ছোট লোকির মুখ দিয়ে যদি আর কখনো আমাদের বন্ধু বলিস তোর জিভ ছিঁড়ে ফেলবো। ছোট লোকের জাত। তোর স্ট্যাস্টাস আর আমাদের স্টাটার্স দেখ। তোর লেভেলের কাউকে বন্ধু বলবি। সাহেব বলবি আমাদের। ( আকিব)
রাজ আকিব রা কাব্যের পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। কাব্য মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে গেলো। কাব্য বাসায় আসতেই দরজার কাছে দাঁড়াতে শুনতে পেলো করিমুন বেগম আশরাফ মিয়া কে বলছে
- ঘরে তো আর একটা ও দানা নেই। তোমার শরীরটা ও ভালো না। কি দিয়ে কি করবো। ( করিমুন)
- আরে চিন্তা করছো কেন? আমাদের ছেলে কাব্য আছে তো ও একটা ব্যবস্থা করবে। ( আশরাফ)
- এই গ্রামে ও কোথায় কাজ পাবে। গ্রামের মানুষই তো ঠিক মতো খেতে পারে না। ওকে কাজ দিবে কে? ( করিমুন)
- কাব্য ঠিকি কিছু একটা করবে । আমার চিকিৎসা করাবে। ( আশরাফ)
করিমুন বেগম শাড়ির আঁচল দিয়ে নিজের চোখের পানি মুছতে লাগলো। কাব্য বাবা মায়ের কথা কপন শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না। চোখের পানি মুছতে মুছতে চলে গেলো। কাব্য সোজা বড় চাচা আদি মিয়া এর বাসায় গেলো। আদি মিয়া মাত্র ঘর থেকে বের হয়েই কাব্যকে দেখে
- অলক্ষুণে আর সামনে পড়ার সময় পেলো না। (আদি মিয়া)
কাব্য আদি মিয়ার কথা শুনে না শোনার ভান করে হাসিমুখে
- চাচা কিছু টাকা ধার হবে৷ পরে পরিশোধ করে দিবো। ( কাব্য)
- নিজে খেতে পারিস না আবার টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করবি কিভাবে। কোনো টাকা নাই। যা ( আদি মিয়া)
- চাচা অল্প কিছু টাকা দেন। বাসায় খাওয়ার মতো কিছু নেই। বাবা অসুস্থ তার জন্য ওষুধ কিনতে হবে। টাকাটা খুব প্রয়োজন। ( কাব্য)
- তোরা মা ছেলে মিলে আমার ভাই টা কে শেষ করে দিলি। আমি এক জায়গায় যাচ্ছি। আমার কাছে কোনো টাকা নেই। সামনে থেকে যা তো। ( আদি মিয়া)
আদি মিয়া বিরক্ত নিয়ে কাব্যকে কথা শুনিয়ে চলে গেলো। ঘর থেকে কাব্যের চাচি হাজেরা বেগম বের হতে হতে
- ফকিন্নির বাচ্চাটার আসার আর টাইম পেলো না। আমার জামাইয়ের শুভ কাজের সময় অলক্ষুণে সামনে পড়লো। না জানি কাজটা হবে কি না। এই তোর মা বাবা ছেলের মরণ হয় না কেন? রোজ রোজ দুয়ারের কাছে আছিস ভিক্ষা করতে। ( হাজেরা বেগম)
হাজেরা বেগমের কথা শুনে কাব্য মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে গেলো৷ হাজেরা বেগম কাব্যকে গালিগালাজ করতে লাগলো। কাব্য হতাশা চেহারা নিয়ে গ্রামের মাটির রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে। পেছন থেকে হ্যাপি দৌড়াইতে দৌড়াইতে কাব্যকে ডাকতে লাগলো। কাব্য অন্যমনস্ক হয়ে হাটছিলো বলে হ্যাপির ডাক খেয়াল করেনি৷ হ্যাপি কাব্যের সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো। কাব্য থেমে হ্যাপির দিকে তাকালো। হ্যাপি বললো
- সেই কখন থেকে পিছন থেকে ডাকছি শুনছেন না কেন? ( হ্যাপি)
- খেয়াল করিনি রে। ( কাব্য)
- চাচাই কি বেশি অসুস্থ । ( হ্যাপি)
- হ রে। তুই যেয়ে তো একটু দেখে আসতে পারিস। ( কাব্য)
- মা বাবা যেতে দেয় না। ( হ্যাপি)
হ্যাপি কাব্যের দিকে একটা মাটির ব্যাংক এগিয়ে দিয়ে
- ভাইয়া এটা নেন। ব্যাংকটা ভেঙ্গে যা টাকা হয় তা দিয়ে চাচার জন্য ওষুধ আর আপনাদের জন্য খাবার নিয়ে যাবেন। ( হ্যাপি)
কাব্য হ্যাপির মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। এতটুকু একটা মেয়ে এসব কি বলে? হ্যাপি বললো
- ভাইয়া কি ভাবছেন? এটা ধরেন। কেউ দেখে ফেললে মা বাবাকে বলে দিলে আমাকে ধরে পিটাবে। ( হ্যাপি)
- কি বলছিস তুই এগুলো? তুই টাকা পেলি কই। ( কাব্য)
- স্কুলে যাবার পথে আব্বু টাকা দিতো সেই টাকা বাঁচিয়ে ব্যাংকে জমা করেছি। ( হ্যাপি)
- আমি তোর টাকা নিতে পারবো না। তুই কষ্ট করে টাকা জমিয়েছিস আর আমি এগুলো নিবো। ভাবলি কি করে? ( কাব্য)
- এখন এতো কথা বলার সময় নেই। ( হ্যাপি)
হ্যাপি কাব্যের হাতে ব্যাংকটা ধরিয়ে দিয়ে দৌড় দিলো। কাব্য বললো
- তুই সবাইকে খুশি রাখতে পারবি। ( কাব্য)
হ্যাপি থেমে পিছনে ফিরে
- আমার নাম কিন্তু হ্যাপি। আমার কাজ সবাইকে খুশি রাখা। ( হ্যাপি)
হ্যাপি কথাটা বলে চলে গেলো। কাব্য পাশে যেয়ে মাটির ব্যাংকটা ইট দিয়ে আস্তে আস্তে উপরের দিকটা কিছুটা ভেঙ্গে ফেললো। টাকাগুলো এক এক করে বের করলো। টাকা গুলো দেখে কাব্য কান্না করে দিলো। হ্যাপি কাব্যের চাচাতো বোন। কাব্যের থেকে ৪ বছরের ছোট। কাব্য ভাবতে লাগলো, হ্যাপি ছোট মানুষ হয়ে ও ওর মানবতা দেখে কাব্য মুগ্ধ । বড়রা যদি একটু হ্যাপির মতো বুঝতো তাহলে কাউকে অপমানিত হতে হতো না।
কাব্য দেরি না করে ওষুধ আর বাজার নিয়ে বাসায় ফিরলো। কাব্য বাসার উঠানে দাঁড়িয়ে মা মা বলে ডাকতে লাগলো। করিমুন বেগম ঘর থেকে বের হয়ে
- এসেছিস। কোনো কিছুর ব্যবস্থা করতে পেরেছিস। ( করিমুন)
- হ পেরেছি। এই নাও বাজার আর আব্বুর ওষুধ । আমি হাতমুখ ধুয়ে আছি। ( কাব্য)
করিমুন বেগম বাজারের ব্যাগ আর ওষুধের প্যাকেট টা নিয়ে
- এতোগুলো টাকা কই পেলি। কারো থেকে ধার নিয়েছিস। ( করিমুন)
- না মা। ( কাব্য)
- কাজ পেয়েছিস নতুন। ( করিমুন বেগম)
- না মা। ( কাব্য)
- তাহলে কোথায় পেলি টাকা। কার থেকে ধার নিয়েছিস। ( করিমুন বেগম)
- মা হ্যাপি টাকা দিয়েছে। ( কাব্য)
করিমুন বেগম অবাক হয়ে তাকিয়ে
- হ্যাপি টাকা পাবে কই। ও ঘর থেকে চুরি করে এনে দেয় নি তো। ( করিমুন বেগম)
- না মা। ও ওর মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা গুলো দিয়েছে। ( কাব্য)
কাব্য করিমুন বেগমকে সবকিছু বলতে লাগলো। করিমুন হা হয়ে কাব্যের সব কথা শুনতে লাগলো। কাব্যের কথা বলা শেষে করিমুন বেগম বললো
- মেয়েটাকে বাসায় আনিস নি কেন? কত দিন দেখি না। ( করিমুন)
- ও সময় করে এসে দেখা করে যাবেনে৷ ( কাব্য)
- আল্লাহ ওকে দীর্ঘ আয়ু দিক। ও সবার জানো ভালো করতে পারে। যা তুই হাত মুখ ধুয়ে বাবার ওষুধ টা খাইয়ে দে। ( করিমুন বেগম)
- আচ্ছা মা। ( কাব্য)
কাব্য চলে গেলো কল পাড়ে। করিমুন বেগম বাজারের ব্যাগ নিয়ে ঘরে যেতেই আশরাফ মিয়া বললো
- কাব্য ফিরেছে। ( আশরাফ)
- হ্যা ফিরেছে বাজার নিয়ে আর তোমার ওষুধ নিয়ে। ( করিমুন)
আশরাফ মিয়া হাসি মুখে করিমুন বেগমকে বললো
- বলেছিলাম না কাব্য খালি হাতে বাড়ি ফিরবে না। ( আশরাফ মিয়া)
করিমুন বেগম হ্যাপির কথা আশরাফ মিয়াকে বললো। আশরাফ মিয়া হ্যাপির কথা শুনে কান্না করে দিয়ে দোয়া করতে লাগলো হ্যাপির জন্য।
কাব্য হাত মুখ ধুয়ে ঘরে এসে আশরাফ মিয়ার পাশে বসলো। ওষুধ বের করে আশরাফ মিয়াকে খাওয়ালো। ওষুধ খাওয়ানো শেষে কাব্য বললো
- কেমন লাগছে শরীর। ( কাব্য)
- আমার আর শরীর নেই। তুই শুধু শুধু ওষুধ কিনে টাকা নষ্ট করছিস। আজ বা কাল আমার ডাক চলে আসবে। ( আশরাফ মিয়া)
কাব্য চোখ পাকিয়ে আশরাফ মিয়াকে বললো
- তোমাকে না বারণ করেছি এই ধরনের কথা বলবে না। ( কাব্য)
- সত্যি টা মেনে নিতে হবে । আমার আয়ু ফুরিয়ে গেছে যেকোনো মুহূর্তে আমি উপরে চলে যাবো। ( আশরাফ)
- বাবা। ( কাব্য)
আশরাফ মিয়া কাব্যের হাত টা ধরে
- আমি যখন না থাকবো তখন তোর একটা দায়িত্ব পালন করতে হবে। ( আশরাফ)
- কি দায়িত্ব বাবা? ( কাব্য)
- তোর মা কে দেখে রাখবি। হ্যাপিকে হ্যাপির মতো করে রাখবি। বড় ভাই হিসেবে হ্যাপির দায়িত্ব পালন করবি। কখনো আফসোস করতে না পারে ওর বড় ভাইয়ের অভাব টা। ( আশরাফ)
- ঠিক আছে বাবা। আমি হ্যাপির পাশে সবসময় থাকবো ওর বড় ভাই হিসেবে। ( কাব্য)
- কোনো কাজের জোগাড় করতে পারলি। ( আশরাফ মিয়া)
- হ্যা। ভোরে করিম চাচার সাথে ঘাটে কাজ করতে যাবো। ( কাব্য)
আশরাফ মিয়া বললো
- তুই পারবি ঘাটে কাজ করতে । তোকে যেতে হবে না। অনেক কষ্টের কাজ। ( আশরাফ)
- আমি পারবো বাবা। এতো চিন্তা করো না। ওখানে তো আমার থেকে অনেক কম বয়সি ছেলে রয়েছে। ওরা পারলে আমি কেন পারবো না। ( কাব্য)
কাব্য আশরাফ মিয়ার সাথে কথা বলে বাহিরে চলে গেলো।
![]() |
Ek villian part 1 |
**
রাত ৮ টা
আশরাফ মিয়া শুয়ে আছে পাশে করিমুন বেগম খ্যাতা সেলাই করছে। বাহির থেকে
এলাকার চেয়ারম্যান খোকন ডাকতে লাগলো
- আশরাফ মিয়া বাসায় আছো নি। ( খোকন)
করিমুন বেগম বাহিরে বের হয়ে এসে
- হ্যা আছে। শোয়া। ( করিমুন)
- ডেকে দাও। ( খোকন)
- অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। যা বলার আমাকে বলেন। ( করিমুন)
- তুমি মহিলা মানুষ তোমার সাথে কথা বলতে চাই না। ( খোকন)
খোকন কথাটা বলে ঘরের ভেতর ঢুকলো। আশরাফ মিয়া খোকন কে দেখে
- চেয়্যারম্যান সাহেব। ( আশরাফ মিয়া)
খোকন কর্কষ গলায় বললো
- আজ কত তারিখ। তোর টাকা পরিশোধ করার কথা কবে ছিলো। এক মাস যাবত তোর কোনো ছায়া পাড়াতে পারলাম না কেন? ( খোকন)
- চেয়ারম্যান সাহেব আমি ১ মাস যাবত অসুর হয়ে বিছানায়। আপনার টাকা ম্যানেজ করতে পারিনি। আপনার কাছে যেতে পারিনি। ( আশরাফ মিয়া)
- আমার টাকাগুলোর তাহলে কি হবে? ( খোকন)
- আমার ফসলের জমি আপনি নিয়ে নেন। আমার পক্ষে আপনার টাকা পরিশোধ করতে পারবো না। ( আশরাফ মিয়া)
খোকন আশরাফের কথা শুনে কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে
- ঠিক আছে উত্তর পাড়ার জমিটা দিতে চাচ্ছিস যখন নিয়ে নিলাম। পরে কিন্তু কাউকে বলিস না জোর জবস্তি করো তোর থেকে জমি নিয়েছি। ( খোকন)
- না না চেয়ারম্যান সাহেব কাউকে বলবো না। ( আশরাফ মিয়া)
খোকন বাহির থেকে ওর লোক একজনকে ডাক দিলো। ফাইল থেকে স্টাম্প পেপার বের করে আশরাফ মিয়া আর করিমুন বেগমের টিপ সই নিয়ে নিলো। খোকন বললো
- দেখি তোর জন্য কোনো ব্যবস্থা করতে পারি কি না। সহায়তার একটা ব্যবস্থা করে দিবো। ( খোকন)
খোকন কথাটা বলে চলে গেলো। বাসা থেকে বের হতে কাব্যের সাথে খোকনের দেখা হলো। খোকন কাব্য কে বললো
- বাপের ঘাড়ের উপর বসে পড়াশোনা করে কোনো লাভ হলো না। চাকরি বাকরি তো করতে পারলি না। তোদের মতো ফকিন্নি যদি পড়াশোনা না করে মাঠে কামলা দিতি তাহলে না খেয়ে দিন কাটাতে হতো না। ( খোকন)
কাব্য খোকনের কথা মাথা নিচু করে নিলো। খোকন চলে গেলো। কাব্য ঘরের ভেতর ঢুকে
- মা চেয়ারম্যান কেন আসছিলো? ( কাব্য)
করিমুন বেগম কাব্যকে বলতে যাবে তখনি আশরাফ মিয়া করিমুন বেগম কে থামিয়ে দিয়ে বললো
- আমাকে দেখতে আসছিলো। যদি কোনো সহায়তা করার ব্যবস্থা করতে পারে। ( আশরাফ)
আশরাফ মিয়ার কথা শুনে করিমুন বেগম মাথা নাড়ালো । কাব্য বললো
- নিজে লুট করে খেয়ে কুল পায় না। সে করবে সহায়তা। ( কাব্য)
- হয়েছে যা তুই হাতমুখ ধুয়ে আয় খেতে দিচ্ছি। যা করার তাই করুক ওরা। ( করিমুন বেগম)
কাব্য আর কোনো কথা না বলে চলে গেলো। করিমুন বেগম খাবার বাড়তে লাগলো।
**
রাত ৪ টা
করিম চাচা এসে কাব্যকে ডাকতে লাগলো। করিমুন বেগম কাব্যকে ঘুম থেকে তুলে দিলো৷ কাব্য করিম চাচার কথা শুনে আর মোচড়া মুচড়ি করলো না। কাব্য উঠে বাহিরে এসে
- চাচা এসেছেন৷ ( কাব্য)
- তোকে আমি কখন আসতে বলছিলাম। বেলা হলে আর কাজ হবে না। দিলি তো দেড়ি করিয়ে। ( করিম চাচা)
- মা কে বলতে ভূলে গেছিলাম। উঠতে পারিনি। ( কাব্য)
- ব্যস্ত চল সময় নেই। ( করিম চাচা)
করিম চাচার সাথে কাব্য চলে গেলো। ঘাটে এসে সারের বস্তা প্রথমে মাথায় নিয়ে উঠা নামা করতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। পরবর্তী তে ঠিক হয়ে গেলো। প্রথম দিন কষ্ট হয়ে গেলো। গাধার মতো খেতে বেলা ১ টার সময় করিম চাচা কাব্যের হাতে ২০০ টাকা আর খরচের টাকা ধরিয়ে দিয়ে
- বাসায় চলে যা। আজ আর কাজ নেই। ( করিম)
কাব্য খুশি মনে টাকাটা নিয়ে বাসায় চলে আসলো। প্রথম উপার্জনের টাকা এসেই করিমুন বেগমের হাতে তুলে দিলো। করিমুন বেগম খুশি হয়ে
- যা গোসল করে আয়। আমি খাবা বাড়তে লাগি। ( করিমুন)
- কল পাড়ে গামছা টা দিয়ে যাও। ( কাব্য)
কাব্য কল পাড়ে চলে গেলো। পানি চেপে গোসল করতে লাগলো আর ভাবতে লাগলো
-কাজ ঠিক মতো হলে তাহলে বাবাকে ও আর কষ্ট পেতে হবে না। বাবার চিকিৎসা টা করাতে পারবো। বাবা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন। ( কাব্য)
করিমুন বেগম গামছা দিয়ে চলে গেলো। কাব্য গোসল শেষ করে ঘরে যেয়ে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়লো। কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো খেয়াল নেই কাব্যের। চিল্লা পাল্লার শব্দ শুনে কাব্যের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কাব্য বাহিরে এসে দেখলো বড় চাচি গালাগাল করে করিমুন বেগম কে বকতে আছে। কাব্য বড় চাচিকে চলে যেতে বলে করিমুন বেগম কে ঘরে এনে
- মা তোমাকে কতো বলেছি ওমন মহিলার সাথে কথা বলবে না৷ তা ও কেন বলতে গেলে। ( কাব্য)
- ধৈর্যের একটা সীমা আছে। তুই আমাকে টেনে নিয়ে আসলি কেন? আজকে বুঝিয়ে দিতাম বেয়াদব মহিলাকে। এতোদিন সব চুপচাপ সহ্য করে এসেছি। এখন আর না। ( করিমুন বেগম)
কাব্য করিমুন বেগম কে বোঝাতে লাগলো। ।।
**
এদিকে
বড় চাচি হাজেরা বেগম বাসায় যেয়ে কান্না করতে করতে আদি মিয়াকে বললো
- তোমার ভাইপো আমাকে মেরেছে। আমার গায়ে হাত তুলেছে। ( হাজেরা বেগম)
আদি মিয়া বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে
- কিহ্। ওর এতো বড়ো সাহস তোমার গায়ে হাত তুলেছে। আজ ওকে মেরে শেষ করে দিবো। ( আদি মিয়া)
আদি মিয়া লাঠি হাতে নিয়ে লোকজন নিয়ে কাব্যদের বাসার দিকে গেলো। হাজেরা বেগম মনে মনে বললো
- এবার মজা বুঝবি। ( হাজেরা বেগম)
আদি মিয়া কাব্যকে গালাগাল দিয়ে ডাকতে লাগলো। কাব্য বাহির হতেই আদি মিয়া ও তার লোক জন কাব্যকে লাঠি পেটা করতে লাগলো। কাব্য অবাক হয়ে গেলো। কিছুই বুঝতে পারছে না৷ কাব্য জিঙ্গেস করছে কেন তাকে মারছে কে শুনে কার কথা। কাব্যকে মারতে লাগলো। করিমুন বেগম ঘর থেকে বাহির হয়ে দেখলো কাব্যকে পেটাচ্ছে করিমুন বেগম এসে ঠেকাতে গেলে করিমুন বেগমলে ও মারলো। কাব্য মাইর খাচ্ছে আর সবাইকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছে। মারা শেষে লাঠি ফেলে দিয়ে আদি মিয়া বললো
- যতটুকু বসত ভিটা আছে থাকার তা ও থাকবে না। ( আদি মিয়া)
আদি মিয়া কথাটা বলে চলে গেলো। করিমুন বেগম কাব্যকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। গ্রামের লোকজন দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব দেখলো কিন্তু কেউ এগিয়ে আসলো বা ঠেকাতে। কাব্য করিমুন বেগমকে বললো
- মা চাচা আমাকে কেন মারলো? ( কাব্য)
- তোর চাচি কিছু বলছে। ( করিমুন)
- এদের কি কেউ কিছু বলতে পারবে না। ( কাব্য)
- বলার মতো কেউ নেই।। কেউ কিছু বললে তাদের উপর ও অত্যাচার করবে। ভয়তে সবাই চুপ থাকে। ( করিমুন)
কাব্য কোনো কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। অসহায় মানুষ গুলোই কি নির্যাযিত বেশি হয়। কাব্য করিমুন বেগমের দিকে তাকিয়ে
- ওরা তোমার গায়ে হাত দিয়েছে। আমি ওদের কাউকে ছাড়বো না। ওদের শাস্তি পেতে হবে। ( কাব্য)
- চুপ এমন কথা মুখে আনবি না। তোর কিছু হয়ে গেলে আমাদের কি হবে? তুই আমাদের একটা মাত্র ছেলে। ওরা কুকুর বলে আমাদের কি কুকুর হতে হবে। ওদের শাস্তি আল্লাহ্ দিবে। ( করিমুন)
কাব্য কান্না করতে লাগলো।
**
ভোর ৪ টায়
শরীর ব্যথা জ্বর নিয়ে করিম চাচার সাথে কাব্য ঘাটে কাজে গেলো। কাজ শেষে করিম চাচা কাব্যের হাতে ৩০০ টাকা দিলো। তখনি কালু মাস্তান হাত থেকে টাকা টা ছিনিয়ে নিয়ে
- করিম মিয়া। নতুন ছেলে কাজে নিয়ে এসেছো আমাকে বললে না কেন? ( কালু)
- বস আপনি তো ছিলেন না কাল তাই আর বলা হয় নি। ( করিম)
- আমার টাকা নিছেন কেন? আমার টাকা দেন। ( কাব্য)
কালু কাব্যের গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দিয়ে
- তোর এতো বড় সাহস আমার কাছে টাকা চাস। চিনিস আমাকে। এখানে একদম মেরে পুতে রেখে দিবো। ( কালু)
কাব্য গালে হাত দিয়ে ভয়তে করিমের পিছনে যেয়ে দাঁড়ালো । করিম বললো
- বস ছোট মানুষ বুঝতে পারে নি ছেড়ে দেন। ( করিম)
- ভালো মতো আমার সম্পর্কে বুঝিয়ে দিস। না হলে আর ছোট দেখবো না রে। ( কালু)
- ঠিক আছে বস। ( করিম)
কালু চেয়ারে বসতে সবাই সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। কাব্য অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে.........
চলবে...............
এদিকে
বড় চাচি হাজেরা বেগম বাসায় যেয়ে কান্না করতে করতে আদি মিয়াকে বললো
- তোমার ভাইপো আমাকে মেরেছে। আমার গায়ে হাত তুলেছে। ( হাজেরা বেগম)
আদি মিয়া বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে
- কিহ্। ওর এতো বড়ো সাহস তোমার গায়ে হাত তুলেছে। আজ ওকে মেরে শেষ করে দিবো। ( আদি মিয়া)
আদি মিয়া লাঠি হাতে নিয়ে লোকজন নিয়ে কাব্যদের বাসার দিকে গেলো। হাজেরা বেগম মনে মনে বললো
- এবার মজা বুঝবি। ( হাজেরা বেগম)
আদি মিয়া কাব্যকে গালাগাল দিয়ে ডাকতে লাগলো। কাব্য বাহির হতেই আদি মিয়া ও তার লোক জন কাব্যকে লাঠি পেটা করতে লাগলো। কাব্য অবাক হয়ে গেলো। কিছুই বুঝতে পারছে না৷ কাব্য জিঙ্গেস করছে কেন তাকে মারছে কে শুনে কার কথা। কাব্যকে মারতে লাগলো। করিমুন বেগম ঘর থেকে বাহির হয়ে দেখলো কাব্যকে পেটাচ্ছে করিমুন বেগম এসে ঠেকাতে গেলে করিমুন বেগমলে ও মারলো। কাব্য মাইর খাচ্ছে আর সবাইকে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছে। মারা শেষে লাঠি ফেলে দিয়ে আদি মিয়া বললো
- যতটুকু বসত ভিটা আছে থাকার তা ও থাকবে না। ( আদি মিয়া)
আদি মিয়া কথাটা বলে চলে গেলো। করিমুন বেগম কাব্যকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। গ্রামের লোকজন দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব দেখলো কিন্তু কেউ এগিয়ে আসলো বা ঠেকাতে। কাব্য করিমুন বেগমকে বললো
- মা চাচা আমাকে কেন মারলো? ( কাব্য)
- তোর চাচি কিছু বলছে। ( করিমুন)
- এদের কি কেউ কিছু বলতে পারবে না। ( কাব্য)
- বলার মতো কেউ নেই।। কেউ কিছু বললে তাদের উপর ও অত্যাচার করবে। ভয়তে সবাই চুপ থাকে। ( করিমুন)
কাব্য কোনো কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। অসহায় মানুষ গুলোই কি নির্যাযিত বেশি হয়। কাব্য করিমুন বেগমের দিকে তাকিয়ে
- ওরা তোমার গায়ে হাত দিয়েছে। আমি ওদের কাউকে ছাড়বো না। ওদের শাস্তি পেতে হবে। ( কাব্য)
- চুপ এমন কথা মুখে আনবি না। তোর কিছু হয়ে গেলে আমাদের কি হবে? তুই আমাদের একটা মাত্র ছেলে। ওরা কুকুর বলে আমাদের কি কুকুর হতে হবে। ওদের শাস্তি আল্লাহ্ দিবে। ( করিমুন)
কাব্য কান্না করতে লাগলো।
**
ভোর ৪ টায়
শরীর ব্যথা জ্বর নিয়ে করিম চাচার সাথে কাব্য ঘাটে কাজে গেলো। কাজ শেষে করিম চাচা কাব্যের হাতে ৩০০ টাকা দিলো। তখনি কালু মাস্তান হাত থেকে টাকা টা ছিনিয়ে নিয়ে
- করিম মিয়া। নতুন ছেলে কাজে নিয়ে এসেছো আমাকে বললে না কেন? ( কালু)
- বস আপনি তো ছিলেন না কাল তাই আর বলা হয় নি। ( করিম)
- আমার টাকা নিছেন কেন? আমার টাকা দেন। ( কাব্য)
কালু কাব্যের গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দিয়ে
- তোর এতো বড় সাহস আমার কাছে টাকা চাস। চিনিস আমাকে। এখানে একদম মেরে পুতে রেখে দিবো। ( কালু)
কাব্য গালে হাত দিয়ে ভয়তে করিমের পিছনে যেয়ে দাঁড়ালো । করিম বললো
- বস ছোট মানুষ বুঝতে পারে নি ছেড়ে দেন। ( করিম)
- ভালো মতো আমার সম্পর্কে বুঝিয়ে দিস। না হলে আর ছোট দেখবো না রে। ( কালু)
- ঠিক আছে বস। ( করিম)
কালু চেয়ারে বসতে সবাই সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। কাব্য অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে.........
চলবে...............