মা বললো,,
---আমি যা বলতে এলাম! কাল সারাদিন আমি বাসায় ছিলাম না কারন ভার্সিটিতে কিছু কাজ ছিলো(মা ভার্সিটির প্রপোসর) দু মাসের জন্য আমাকে ইন্ডিয়া যেতে হবে। ওখানে একটা ভার্সিটিতে দু মাসের জন্য আমি প্রপেসর হয়ে থাকবো তারপর আবার বাংলাদেশে আসবো। আমার সাথে আদিরা যাবে, আর আমাদের চৌধুরী কম্পানির সাথে একটা ডিল করতেও তোমার বাবা ইন্ডিয়া যাচ্ছে ওখানকার কোনো এক কম্পানীর সাথে।
বিকেলে রওনা দিচ্ছি আমরা, সোয়া তোকে আমার সাথে নিতে পারছি না মা। নিজেকে এখানে একটু সাবধানে রাখবি, বলা তো যায় না তোকে একা রেখে গেছি বলে কে কোন দিক দিয়ে আবার অত্যাচার করা শুরু করে।
---না না মা তোমরা যেতে পারো! আমি নিজেকে সবসময় সাবধানে রাখবো।
---ঠিক আছে! আমি এতটুকুই বলতে এলাম।
আদি বললো,,,
---আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম মা?
---আমি এখন আপাতত কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। আর আমার বারন করা সত্ত্বেও আমার সাথে জোর করে কেনো কথা বলতে এসেছে।
---সরি আমার খেয়াল ছিলো না।
মা নাস্তা করতে চলে যায়।সোয়া আদির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলছে "আমার জন্য নিজের মায়ের সাথে আজ কথা বলতে পারছে না। মায়ের সাথে কথা না বলতে পারলে কতোটা যে কষ্ট লাগে যে বলতে পারেনা সেই জানে। আমাকে যাওয়ার আগে ওদের সম্পর্ক ঠিক করে যেতে হবে। "
সোয়া চলে গেলো "আদি ভাবছে মা তোমার সাথে আজকাল কথা বলতে পারমিশন লাগে। আগের মতোই জেদি রয়ে গেছো, কিভাবে আমি সেই আমাদের আগের মা ছেলের ভালোবাসার সম্পর্ক ফিরিয়ে আনবো। যেভাবে হোক ফিরিয়ে তো আমাকে আনতে হবেই, গার্লফ্রেন্ডের চেয়ে আমার কাছে আমার মায়ের ভালোবাসা বেশি জরুরি। হুম, আমি ফিরিয়ে আনবো।
আদি বাবাকে বললো_______
---বাবা, আমি আসি!
---হ্যাঁ যা। আজ একটু তাড়াতাড়ি অফিস থেকে আসিস।
---ঠিক আছে বাবা।
আদি অফিসের উদ্দেশ্যে চলে গেলো। মা একনজর আদির দিকে তাকালো! মায়ের চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়েছিলো।মায়ের তো নিজের ও কষ্ট হচ্ছে ছেলের সাথে কথা বলতে না ফেরে। কিন্তু, এই জেদটা যদি মা না ধরে তাহলে তার ছেলের যোগ্য বউ যে হারাবে।
কেউ দেখার আগে মা চোখের সেই পানির ফোটা মুছে ফেললো হাত দিয়ে।নাস্তা করা শেষে সবাই গোছগাছ করে নেয় নিজেদের যা যা প্রয়োজন।আদিরার মন খারাপ ভাবিকে ছেড়ে এতোটা দিন কাটাবে কি করে সে। এখন তো ভাবির সাথে কথা না বললে তার একটা দিনও কাটেনা।
বিকেল ঘরিয়ে এলো আদিও তারাতারি অফিস থেকে চলে আসে বাড়িতে! মা-বাবা, আদিরা তাদের ট্রলি নিয়ে গাড়ির কাছে চলে আসে।সোয়া আদিরাকে বললো,,,,
---এই পাগলি এতো গাল ফুলিয়ে আছো কেনো?
---কই আমি গাল ফুলিয়ে আছি!
---হয়েছে থাক আমার কাছ থেকে আর লুকাতে হবে না। শুনো, আমি আছিতো কোথাও চলে যাচ্ছিনা। তাহলে এতো মন খারাপ করার কি আছে!
---ভাবি!
---কি হয়েছে ননদীনি?
---তুমি ও আমাদের সাথে চলোনা।
সোয়া আস্তে করে বললো,,,
---আমি যদি তোমাদের সাথে যাই তাহলে তোমার ভাইয়া যে বাসায় তার কি হবে শুনি?তার খাবার ও তো দিতে হয় না। তার খেয়াল রাখতে হবে না!
---আবার, আবার শুরু করছো ভাবি তুমি! যে তোমার খোঁজখবর রাখেনা তার কেনো তুমি রাখতে যাবে। তার খেয়াল রাখার মতো তো মানুষ আছে না ওই যে সেই ডাইনি তারাটা। তাকে খেতে দিবে, ঘুম পাড়িয়ে দিবে, খেয়াল রাখবে না।
---আচ্ছা, থাক বাদ দেও। যাও এখন গাড়িতে গিয়ে বসো, নিজের খেয়াল রাখবা, ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করবা। পারলে আমার জন্য একটা জামাইবাবু ধরে এনো ঠিক আছে।
---জামাইবাবু মানে ভাবি?
---মানে কি আপনি জানেন না!
আদিরা কাশি দিতে দিতে বললো,,,
---এটা আবার ধরা লাগে নাকি। ফোনেই তো আলাপ হয়।
---ওহ সেট আমার তো মনেই ছিলোনা। আচ্ছা, যাও পরে ফোনে সব কথা বলবো।
---ঠিক আছে।
আদিরা গিয়ে গাড়িতে বসলো। মাও সোয়াকে কিছু বলে চলে গেলো।বাবা বললো,,,
---নিজের খেয়াল রাখিস মা!
---জ্বি, বাবা আপনি ও নিজের খেয়াল রাখবেন।
---হুহ! তোর সামনে কিন্তু অনেক বড় একটা পরীক্ষা মা, এই দু মাসের মধ্যে তোকে কতো কাজ করতে হবে মনে আছে তো।
---হ্যাঁ বাবা! আমার সবই মনে আছে।আমি সর্বদা চেষ্টা করবো সেই কাজ করতে, আশা করি ফেরেও যাবো।
---আল্লাহ ভরশা আসি।
---হুম।
আদি বাবাকে বললো,,,
---বাবা আমি কি তোমাদের বর্ডার অবধি এগিয়ে দিয়ে আসবো।
---না থাক! আমরা যেতে পারব। তুই এখন বাসায় থাক।
---ঠিক আছে।
গাড়ি স্টাট দিলো ড্রাইভার আর চালাতে শুরু করে। যতদূর অবধি তাদের গাড়ির চিহ্ন দেখা গেছে ততদূর অবধি দাড়িয়ে তাকিয়ে ছিলো আদি আর সোয়া।
তারপর দুজনে বাসায় ডুকে, আদি উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। সোয়া দিনের জন্য আদিরার রুম বেচেঁ নেয় আর রাতে তার জন্য তো আদি ঠিকই করে দিলো। সোয়া রুমে ডুকে কেউ একজনকে ফোন করলো।
---Hello!
.....
---Somebody Hasn't Now live! Adira, Mom &Dad pern have, For The Time Being 2 Months for Ventured!
...............
.....................
............................
---okey!Sothe of Sub -parts our Mission Finish To do Would!
.........
.............
.................
---Huh! See you again!
ফোন রেখে দিলো সোয়া আর দেখলো কেউ তার কথা শুনেছে কিনা! নাহ কেউ শুনেনি ফোন ঠিক মতো আগের যায়গায় রেখে তারপর নিচে গেলো।
.
!!!
আদি ফ্রেশ হয়ে এসে বিচানার উপর বসলো। কেউ নেই বাড়িতে কেমন ফাকা লাগছে আর ভালোও লাগছে না।ওর মন খারাপের সময় মায়ের কোলে মাথা রেখে শুতো। তারপর মা হাত বুলিয়ে দিতো মাথায় আবার মাঝে মাঝে গান বলতো।
মা সেই কবে গান বলেছে আর বলেনি, আর কাল সোয়ার মুখে শুনলো। আদির যে রবীন্দ্র সংগীত খুব প্রিয় সেটা কি সোয়া জানে, আর আদিও কি জানে সোয়ারও যে খুব প্রিয়। আদির মন চাইছে একবার সোয়াকে ডাকবে আবার বলছে থাক ডাকিস না। কি লাভ ডেকে শুধু শুধু তাকে কথা শুনাবি।
তারপর ফোন করলো তারাকে, প্রথম কলে ধরেনি দ্বিতীয় কলে ধরেছে।আদি বললো,,,,,
---ফোন ধরনি কেন?
---সরি! একটু বিজি ছিলাম।
---ওহ, আচ্ছা। কি করো?
---নাথিং! তুমি?
---ভালো লাগছে কিছু! বসে আছি।
---কেনো কি হয়েছে?
---আদিরা, মা-বাবা ইন্ডিয়া গিয়েছে দু মাসের জন্য। তাদের ছাড়া আজ খুব একলা লাগছে। মনে হচ্ছে কেউ নেই আমার দমটা বন্ধ হয়ে আসছে।
---মন খারাপ করোনা। আজ আমার বাসায় একটা পার্টি আছে, সো চলে এসো। এন্ড ওই মেয়েটা আছে বাসায় থাকলে সাথে করে নিয়ে এসো। একটা গেম খেলবো।
---মানে?
---মানে কিছুনা! সন্ধ্যায় চলে এসো।
----ওকে!
টুট টুট ফোন কেটে গেল।আদির মাথায় চিন্তা কিসের গেমের কথা বলছে তারা। অপর সাইডে তারা ভাবছে,,,,,
----একটা পাখি উড়ে গেল সো হোয়াট ফিরে তো আসবেই তখন তাকে নিয়ে হবে খেলা। এখন আপাতত একে নিয়ে হাঃহাঃ।
রাইজান সোয়াকে ফোন করলো,,,,
---হাই সুইটি! হাউ আর ইউ?
---ভালো, আপনি?
---তোমায় ছাড়া ভালো থাকা যায়।
"বিরহী অবেলায়, তুমিহীনা আমি একেলা,
মন নেই ভালো, আমিও নেই ভালো।
মনে পরে তোমায় খুব,
তোমার ও মিষ্টি সুরে আমায় মাতাল করে।
সেই মায়াবি চোখ, করে আমায় বিমুখ!
হাসিরও শব্দে, প্রানটা ফিরে আসে।
#লেখা_রিমি
---বাহ, আপনি তো দেখি ছন্দময়ী। কবি হওয়ার লক্ষণ!
রাইজান আর কিছু বলার আগে আদি সোয়াকে ডাক দেয়।
---সোয়া ..............সোয়া?
----আপনার সাথে পরে কথা বলছি এখন রাখি হ্যাঁ। আমার ডাক পরেছে!
---ওকে!
---হ্যাঁ বলুন!
---সন্ধ্যায় রেডি হয়ে থাকবেন, আজকে তারা একটা পার্টি দিচ্ছে আমাদের যেতে বললো।
---আপনি যান, আমি যাবোনা!
---কেনো?
---এমনি, আমার ওইসব ভালো লাগেনা।
---আমি বলছি আপনাকে যেতে হবে।
আদি একটু রাগী ভাব নিয়ে বললে সোয়া ভয় পেয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সম্মতি জানায়।সন্ধ্যায় আদি রেডি হয়, কিন্তু সোয়ার এখনো হয়নি।
আদির কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তার ভিতরে বিরক্তি লেগে যায়। তাই না ডেকে সোজা আদিরার রুমের দরজাটা খুলে ফেলে ধাক্কা দিয়ে।
---অফ এই ব্লাউজটা এতো অসহ্য যে কি বলবো। এতো স্টাইল করার কি হলো ডিজাইনারদের সিম্পল করলেই তো চলতো। শুধু শুধু পিছনে একটা ফিতা দিতে গেলো।
দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে পিছনে ফিরে তাকায়।আদি বললো,,,,
----এতক্ষণ কি করছেন আপনি!
---আসলে...
---আসলে কি?
---আসলে ব্লাইউজের ফিতাটা লাগাতে পারিনি!
---ওহ আচ্ছা দিন, আমি লাগিয়ে দেই।
---আপনি লাগাবেন?
---হ্যাঁ কোনো সমস্যা!
সোয়াকে তার পিছনে করে ফিতা লাগাচ্ছে। আদির হাতের স্পর্শ সোয়ার পিঠে লাগছে যার কারনে সোয়া শিহরিয়ে উঠছে। কি অন্যরকম অনূভুতি সৃষ্টি হচ্ছে আদির জন্য সোয়ার।
ফিতা লাগানো হলে দুজনে গাড়িতে করে তারার বাসায় চলে যায়।তারাও মেইন দরজার সামনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে।তারার একটা ফ্রেন্ড তারাকে বললো_______
---কিরে তারা এখানে কি করছিস?
---আদির জন্য অপেক্ষা!
---ওহ হো আমার মনেই ছিলোনা। সেই মেয়েটা আসবে নাকি রে?
---অবশ্যই! আজ আসুক তারপর দেখিস কি হয়!
---কি করবি?
---আজ সবার সামনে ওকে কি করবো জানিস?
ভালোবাসার আলতো ছোঁয়া
হাফিজ মাহমুদ
পর্ব : ১২
.চলবে,,,,